শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০১৯, ১২:৩০ দুপুর
আপডেট : ২১ জুন, ২০১৯, ১২:৩০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উচ্চ ফলনশীল তিন নতুন ধানের  উদ্ভাবন

ডেস্ক রিপোর্ট : আমন ও বোরো মৌসুমে চাষের উপযোগী তিনটি নতুন উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। এগুলো হলো রোপা আমনের প্রিমিয়াম কোয়ালিটি জাত ব্রি ধান ৯০ ও বোনা আমনের জাত ব্রি ধান ৯১ এবং বোরো মৌসুমের পানিসাশ্রয়ী জাত ব্রি ধান ৯২। ব্রি ধান ৯০-এর গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৫ টন। এ ফলন আমন মৌসুমের জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান ৩৪-এর চেয়ে হেক্টরে ১ থেকে ১.৪ টন বেশি। ব্রি ধান ৯১-এর হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ২.৩৭ টন যা স্থানীয় জাত ফুলকরির চেয়ে ১.৫ টন বেশি। আর বোরো জাত ব্রি ধান ৯২-এর গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৮.৩ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যায় এ জাত হেক্টরপ্রতি ৯.৩ টন ফলন দিতে সক্ষম। জনকণ্ঠ

জাতীয় বীজ বোর্ডের বুধবারের সভায় নতুন এ জাতগুলো চাষাবাদের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীরসহ কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় বীজ বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, নতুন উদ্ভাবিত জাত ব্রি ধান ৯০ এ আধুনিক উচ্চ ফলনশীল ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ এ জাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এর দানার আকৃতি ব্রি ধান ৩৪-এর মতো হালকা সুগন্ধযুক্ত। এ জাতের পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১১০ সেন্টিমিটার। এ জাতের গড় জীবনকাল ১১৭দিন, যা ব্রি ধান ৩৪-এর চেয়ে ২১দিন আগাম। এর চাষাবাদের জন্য সারের মাত্রা অন্যান্য উফশী জাতের মতোই, তবে ইউরিয়া সারের পরিমাণ এতে কিছুটা কম প্রয়োজন হয়। এ ধানে এ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৩.২% এবং প্রোটিন ১০.৩% ভাগ। এ জাতের ১ হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন ১২.৭ গ্রাম। ব্রি ধান ৯০ জাতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এর কা- শক্ত, সহজে হেলে পড়ে না এবং ধান পাকার পরও গাছ সবুজ থাকে। এ জাতের ডিগপাতা খাড়া ও ফুল প্রায় একসঙ্গে ফোটে বিধায় দেখতে খুব আকর্ষণীয় হয়। এর গড় ফলন পাঁচ টন হলেও উপযুক্ত পরির্চযায় এটি সাড়ে পাঁচ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। আশা করা হচ্ছে, নতুন উদ্ভাবিত এ জাত স্থানীয় জাত চিনিগুঁড়া এবং চিনি আতপের বিকল্প হিসেবে ভোক্তার চাহিদা পূরণ করবে।

নতুন উদ্ভাবিত অপর বোনা আমনের জাতটি হলো ব্রি ধান ৯১। এ জাতের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো, এর পাতা গাঢ় সবুজ রঙের ও ডিগপাতা খাড়া। গাছের চারা বেশ লম্বা ও দ্রুত বর্ধনশীল। এ জাতের ধান গাছের গড় উচ্চতা ১৮০ সেন্টিমিটার এবং সহজে হেলে পড়ে না। এটি মধ্যম মাত্রার স্টেম ইলঙ্গেশন গুণসম্পন্ন অর্থাৎ পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এটি বাড়তে পারে এবং এটি জলমগ্নতা সহিষ্ণু। এ জাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো, বন্যার পানি সরে যাওয়ার পরে হেলে পড়লেও গাছের কান্ড পরে শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে। এটি মুড়ি ফসল হিসেবে চাষ উপযোগী। এর গড় জীবনকাল ১৫৬ দিন যা স্থানীয় জলি আমন ধানের জাতের চেয়ে ১০-১৫ দিন আগাম। এর ১ হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৬ গ্রাম। এর ভাত ঝরঝরে ও সাদা। এ জাতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে কম হয়।

স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা জলি আমন জাতের মধ্যে আছে মানিকগঞ্জ অঞ্চলে দীঘা, দুধবাওয়াইলা, ঝিঙ্গাশাইল, ভেপা; ফরিদপুর অঞ্চলে বাইল্যা দীঘা, খইয়ামটর এবং কুমিল্লা অঞ্চলে ফুলকুড়ি, কাইত্যা বাগদার ইত্যাদি। এসব স্থানীয়জাত থেকে ব্রি ধান ৯১ হেক্টরে অন্তত এক টন ফলন বেশি দেয়। এ জাত দেশের এক মিটার উচ্চতার গভীর পানির বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে পাঁচ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ করতে পারলে মোট ধান উৎপাদন প্রায় পাঁচ লাখ টন বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়াও বোরো মৌসুমের পানিসাশ্রয়ী অপর জাতটি ব্রি ধান ৯২। এ ধান চাষে তুলনামূলক কম পানি ব্যবহার করেও ব্রি ধান ২৯-এর সমান ফলন পাওয়া যায়। সেজন্য বরেন্দ্র অঞ্চলে শুকনো মৌসুমে যেখানে পানির স্তর নিচে নেমে যায় সেখানে এটি চাষ করে সুফল পাওয়া যাবে।

ড. মোঃ শাহজাহান কবীর জানান, ব্রি ধান ৯২ জাতের জীবনকাল ব্রি ধান ২৯-এর সমান অর্থাৎ ১৫৬-১৬০ দিন। এ জাতের কা- শক্ত, পাতা হালকা সবুজ এবং ডিগপাতা চওড়া। এ ধানের ছড়া লম্বা ও ধান পাকার সময় ছড়া ডিগপাতার উপরে থাকে। এর চাল লম্বা ও সোজা। এ জাত হেক্টরে গড়ে ৮.৪ টন ফলন দেয়। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টরে ৯.৩ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। এ জাতের পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০৭ সেন্টিমিটার। এ জাতের গাছের কান্ড শক্ত। তাই গাছ লম্বা হলেও হেলে পড়ে না। এর দানা লম্বা ও চিকন। এর পাতা হালকা সবুজ রঙের। ডিগপাতা খাড়া এবং ব্রি ধান ২৯-এর চেয়ে প্রশস্ত। এ ধান পাকার সময় কান্ড ও পাতা সবুজ থাকে। এ জাতের ১ হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৩.৪ গ্রাম। এ জাতের ধানে ভাত ঝরঝরে করার উপাদান এ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৬% ভাগ। ব্রির বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, নতুন জাত তিনটি কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় হবে এবং সামগ্রিকভাবে ধান উৎপাদন বাড়বে।

– ডব্লিউএস/এসবি/এএস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়