নূর মাজিদ : শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদিদের শোষণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তির পর ২৫ বছর পার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মাঝে দেশটিতে গণতন্ত্রও এসেছে। কিন্তু, এই গণতন্ত্র অধিকাংশ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক হয়নি। বর্তমানে দেশটির স¤পদ ও আয়-বৈষম্য চিত্রের দিকে তাকালে যা আরো ¯পষ্ট হয়ে ওঠে। এখনও লাখ লাখ দরিদ্র দক্ষিণ আফ্রিকার জনগোষ্ঠী চরম দারিদ্রের মাঝে বস্তিতে বসবাস করেন। সা¤প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলছে, সারা দুনিয়ার ভেতর বর্তমানে দক্ষিন আফ্রিকাতেই অর্থনৈতিক বৈষম্য সবচাইতে বেশি। সূত্র : সিএনএন
চলতি মাসে প্রকাশিত ‘২০১৮- প্রভার্টি অ্যান্ড ইন-ইক্যুয়ালিটি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানায়, ১৯৯৪ সালে বর্ণবাদি শাসনামলে যে বৈষম্য ছিলো এখনও সেটা বজায় রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে বরং পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় স¤পদের এই পার্থক্য খুবই দৃশ্যমান। জোহানসবার্গ শহরের বে¬াবুস্রান্ড এলাকা এর এক জলজ্যান্ত উদাহরণ। এখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ বসবাস করেন, যাদের অধিকাংশই শ্বেতাঙ্গ নয়তো এশিয় বংশদ্ভুত। অট্টালিকার ন্যায় প্রতিটি বাড়িতেই আছে প্রসস্ত সুইমিং পুলসহ বিলাস ব্যসনের নানা আয়োজন। বে¬াবুস্রান্ড এলাকার পরেই পাশেই রয়েছে একটি বস্তি। সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করেন কালো মানুষেরা। আকাশ থেকে ড্রোনের মাধ্যমে তোলা ছবিতে এই বৈষম্য আরো পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে,সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী এখনও দেশটির অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং সবচাইতে বেশি সুবিধা ভোগ করে। এই বিষয়ে তারা দুর্নীতিগ্রস্ত কৃষ্ণাঙ্গ রাজনীতিবিদদের একটি অভিজাত অংশের বলিষ্ঠ সহযোগিতা পায়। সমাজের নানা শ্রেণীর মাঝে এই ধন-বৈষম্য পৃথিবীর অন্য যে কোন দেশের চাইতে অনেক বেশি।
এই বিষয়ে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ আফ্রিকা শাখার প্রধান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাথান্দাজো নোভুলু বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকারের দুর্নীতি এবং সরকারি নীতির ব্যর্থতার কারণে প্রতিবছরই এই বৈষম্য বেড়ে চলেছে। তিনি আরো বলেন, শুধু যে আয়-বৈষম্য রয়েছে এমনটা নয়, চাকরি এবং ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেও সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত কৃষ্ণ আফ্রিকানরা। এই ধরনের বৈষম্য মূলত বর্ণবাদি ঐতিহ্য এবং চিন্তার ফসল। আর এটাই সবচাইতে বড় উদ্বেগের বিষয়।’