শিরোনাম
◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক

প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০১৯, ১২:২৮ দুপুর
আপডেট : ২৮ মে, ২০১৯, ১২:২৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাড়ে ৪ মাসে নিষ্পত্তি ৪৩ হাজার মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট : সুপ্রিমকোর্টের মামলার জট খুলতে কার্যকরী উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বছরের পর বছর ধরে চলা মামলার নিষ্পত্তি করতে তিনি এ উদ্যোগ নেন। ‘ফৌজদারি বিবিধ (ক্রিমিনাল মিস কেস) মামলা’ নিষ্পত্তিতে হাইকোর্টের ১৬টি বেঞ্চকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর ১৬ মে পর্যন্ত সাড়ে চার মাসে হাইকোর্টের এসব বেঞ্চ ৯০ হাজার ৩৮৯টি মামলার মধ্যে ৪৩ হাজার ৯৩টি মামলা নিষ্পত্তি করেন। যুগান্তর

আদালতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেখানে দিনে দিনে উচ্চ আদালতে মামলার জট বাড়ছে, সেখানে সাড়ে চার মাসে এত বিপুলসংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে উচ্চ আদালত অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. জাকির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, সুপ্রিমকোর্টের মামলা জট নিরসনে প্রধান বিচারপতি গতিশীল (ডায়নামিক) সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রায় ৯০ হাজার পুরনো মামলা নিষ্পত্তির কাজ চলছে। খুব পুরনো ফৌজদারি (বিবিধ) মামলাগুলোর শুনানির জন্য হাইকোর্টের বেঞ্চগুলো নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তার সিদ্ধান্ত অনুসারে সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার পুরনো মামলাগুলো বেঞ্চগুলোর কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) শুনানির জন্য রাখা হয়। এ উদ্যোগে সফলতা পাওয়া যাচ্ছে। ১৬ মে পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৯৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।

জানা যায়, চলতি বছরের শুরুতে বিচারাধীন মামলার নিষ্পত্তির ওপর জোর দেন প্রধান বিচারপতি। তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪৯৮ ধারার অধীনে থাকা ৯০ হাজার ৩৮৯টি পুরনো ফৌজদারি (বিবিধ) মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ওইসব মামলার নিষ্পত্তি শুরু হয়। এ মামলাগুলোর নিষ্পত্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. ফারুক (এম ফারুক), বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিচারপতি এএনএম বসির উল্লাহ, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি।

উচ্চ আদালতে মামলার জট নিয়ে ২৮ এপ্রিল উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, সুপ্রিমকোর্টে মামলার ফাইল রাখার মতো পর্যন্ত জায়গা নেই। এক কথায় ক্রিটিকাল অবস্থা, এভাবে চলতে পারে না। এর সমাধান বের করতে হবে। আপিল বেঞ্চে একটি মামলার শুনানির সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টে প্রায় পাঁচ লাখ ২৫ হাজার মামলা বিচারাধীন। কিন্তু ১৯৮২ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২৫ হাজার। আগাম জামিনের আবেদনগুলো নিষ্পত্তি না করা হলে বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টে মামলার সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেত বলেও তিনি জানান। মামলা জট নিরসন নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে ফুলকোর্ট সভা করেন তিনি। সেখানে বিচারপতিরা মামলাজট নিরসনে নতুন বিচারপতি নিয়োগসহ নানা পরামর্শ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর দেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৩৫ লাখ সাত হাজার ৮৯৮টি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর মামলার সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫০টি। এর মধ্যে নিু আদালতে ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৬৫৬টি, সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার ৬৫২টি এবং আপিল বিভাগে ২০ হাজার ৪৪২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এতে দেখা যায়, এই তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) সব আদালতে বিচারাধীন মামলা বেড়েছে ৬১ হাজার ৮৫২টি। আর দায়ের হয়েছে চার লাখ ৪৭ হাজার ৮৫৪টি এবং নিষ্পত্তি হয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ১৩১টি মামলা।

মামলা জট নিষ্পত্তিতে সুপ্রিমকোর্টের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, মামলা জট নিরসনে নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তিনি বলেন, জট কমাতে হলে মামলা নিষ্পত্তির হার বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে মহাপরিকল্পনা। বিচারক ও তাদের সহায়ক লোকবল বাড়ানোর আগে ব্যবস্থাপনায় একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আনা দরকার।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, সাড়ে চার মাসে ৪৩ হাজার ৯৩টি মামলা নিষ্পত্তি করা একটা বিরাট সাফল্য। এ সাফল্য উচ্চ আদালতে বিরাজমান মামলার জট নিরসনে বিরাট ভূমিকা রাখবে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়