লিউনা হক: কেনিয়ার হাইকোর্ট শুক্রবার সমকামী নিষেধাজ্ঞার স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করেছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কঠোর সমালোচনা স্বত্তে¡ও পূর্ব আফ্রিকান দেশগুলো সমকামী সম্পর্কের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদন্ড দেওয়ার বিষয়টি বহাল রেখেছে।
সারাবিশ্বে ৭০ টিরও বেশি দেশে সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি দেশ আফ্রিকা মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত। পাশ্ববর্তী দেশ উগান্ডায় মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় এই অপরাধের জন্য।
দক্ষিণ আফ্রিকায় একমাত্র দেশ যেখানে সমকামী বিয়ের বৈধতা আছে।
কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির একটি গোপন আদালতকক্ষে বিচারপতি রোজেলিন আবুরিলি তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সর্বজনস্বীকৃত মতামতের উপর ভিত্তি করে বলেন, আমরা এই ধারাটিকে অসাংবিধানিক হিসেবে দেখছি না, তাই এই প্রেক্ষিতে সম্মিলিত আবেদনের কোন তাৎপর্য নাই।
সমকামী নিষেধাজ্ঞায় সমর্থকরা যখন আনন্দে হাততালি এবং একে অপরকে অভিনন্দন জানিয়ে বিচারকদের বেঞ্চকে ধন্যবাদ দিয়েছে তখন কিছু সমকামী আন্দোলনকারী আদালতের বাইরে কাঁদছে।
‘সমকামীতা সবচেয়ে জঘন্য’ বলে অনেক বিরোধীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে আদালতের বাইরে অবস্থান করছিলেন।
আন্দোলনকারীরা কেনিয়ার ২০১০ সালের সংবিধানে সকল নাগরিকদের জন্য সমতা, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রেক্ষিতে সমকামী সম্পর্কের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করে।
নিউইয়র্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ গবেষক নিলা ঘোষাল বলেন, নাইরোবির আদালতের রায়টি সমকামিদের ‘দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে’র মর্যাদা দিল।
সামাজিক বৈষম্যের কারণে কারোর মানবাধিকার পদদলিত হতে পারেনা। আদালতের উচিত বিষয়টি পুর্নবিবেচনা করা।
দ্য ন্যাশনাল গে এন্ড ল্যাসবিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন জানায়, ২০১৪ সাল থেকে ১৫০০ জন ল্যাসবিয়ান, গে, বাইস্যাক্সুয়্যাল, ট্রান্সজেন্ডার (এলজিবিটি) নির্যাতনের শিকার হন। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৫৩৪ সমকামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় দেশটির সরকার।
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মিশেল ব্যাচলেট বলেন, আইনটি এলজিবিটিদের বিরুদ্ধে শত্রুতা ও হিং¯্রতাকে প্রণোদিত করে।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা ডেপুটি প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুতোর সঙ্গে এক আলোচনায় বলেন, কেনিয়াতে সমকামিদের কোন জায়গা নেই। সমকামি আসলে কোন বিষয় না। এটি সন্ত্রাসবাদের মতো বিপজ্জনক।
আপনার মতামত লিখুন :