খালিদ আহমেদ : আলোচিত বিমান ছিনতাই চেষ্টা মামলার ত্দন্তকারী কর্মকর্তাকে এমন তথ্য দিয়েছেন নিহত মূল আসামি পলাশ আহমেদ ওরফে মাহাদির বাবা-মা।এমন কথা বলছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া।তিনি বলেন, নিহত পলাশ আহমেদের স্ত্রী সিমলার হদিস মিলছে না।তার সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।
প্রায় তিন মাস এই মামলার তদন্ত চললেও রহস্যভেদ করতে পারেনি পুলিশ । তাদের ধারনা নায়িকা সিমলাকে ঘিরে রহস্য জট পাকাচ্ছে । বিমানে থাকা যাত্রীরা পুলিশকে বলেছে বিমান ছিনতাইয়ের পর পলাশ বার বার স্ত্রী সিমলার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, তারা এরইমধ্যে পনের রকমের আলামত সংগ্রহ করেছে।১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নানা তথ্য-উপাত্তও সংগ্রহ করেছে।পুলিশ বলছে তদন্তে মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।কারণ ঘটনার পুরো রহস্যই লুকিয়ে আছে চিত্রনায়িকা সামশুন নাহার সিমলার মধ্যে।আর সিমলাকে খুঁজে না পাওয়ায় মামলার পুরো তদন্তই আটকে আছে।
সিমলার পরিবার থেকে জানানো হচ্ছে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। কিন্তু ঘটনার পর এতদিনেও দেশে ফেরেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত সিমলাকে তদন্ত সংস্থার কাছে হাজির হতে দু-একদিনের মধ্যে স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হচ্ছে বলে জানান পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া।
এ ছাড়া পলাশ আহমেদের মা-বাবার দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, ঘটনার নেপথ্যে সিমলার সঙ্গে পলাশের বিচ্ছেদ, পলাশের কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ও রয়েছে। যা ধারদেনা করে পলাশ এ অর্থ সিমলার হাতে তুলে দেন বলে তথ্য দেন।
এ অবস্থায় পলাশের সঙ্গে সিমলার কি হয়েছিল, অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টিও সঠিক কিনা, তার প্রকৃত সত্য জানতে সিমলার সঙ্গে কথা বলা দরকার। কিন্তু সিমলা একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। তার এ আচরণ রহস্যজনক। এতে সিমলার প্রতি তদন্ত টিমের সন্দেহ বাড়ছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, মামলার স্বার্থে চিত্রনায়িকা সিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। কারণ বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনার হেতু কি? পলাশ আহমেদ কেনই বা এতবড় ঝুঁকি নিলেন, পলাশ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন কথা বলতে চাইলেন। স্ত্রীকে ফিরে পাওয়া নিয়ে পলাশ আহমেদের যে দাবি তার সত্যতা বা যৌক্তিকতা কি? নেপথ্যে এই কারণগুলো রয়ে গেছে। এসব জানা গেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা এ মামলার চার্জশিট দিতে পারবো। এ নিয়ে তার পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কথাও বলেছি। কিন্তু সিমলার হদিস মিলছে না।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিলো।ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার অবসান ঘটে। রাত ৮টার দিকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র আট মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটির ছিনতাইকারী পলাশ আহমদ (২৫) নিহত হন। এ ঘটনায় ২৫শে ফেব্রুয়ারি নগরীর পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন সিভিল এভিয়েশনের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার। এতে কমান্ডো অভিযানে নিহত পলাশ ও অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।