মুসবা তিন্নি : উত্তরপ্রদেশের নয়াবাঁসে আগে হিন্দু এবং মসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন একসঙ্গে বাস করতেন৷ জন্ম হোক কিংবা মৃত্যু , সবাইকে জীবনের যেকোনও মুহূর্তে একে অন্যকে পাশে পেতেন সকলে৷ সর্বধর্ম সমন্বয়ের ঐতিহ্যকে আগলে বাঁচতেন এখানকার মানুষ৷ কিন্তু হায়! বর্তমানে সেই ছবি পুরোটাই বদলে গেছে৷ এখন আর পথ চলতে দেখা হলেও, কেউ কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না৷ বিপদে কেউ কারও পাশেও থাকেন না৷ ধর্মের বেড়াজালই যেন এখন মূল ইস্যু৷ কিন্তু কেন এমন উলটপুরাণ ? গ্রামবাসীরা যদিও এই বৈপরীত্যের কারণ খুঁজে পেয়েছেন খুব সহজেই৷ সংবাদ প্রতিদিন
এই গ্রামেরই বাসিন্দা গুলফাম আলি৷ তিনি এলাকায় একটি ছোট্ট দোকান চালান৷ তিনি বলছেন, ‘‘আগে জীবনের দুঃসময় এবং সুসময়ে হিন্দু মুসলমান সকলে একসঙ্গে থাকতাম৷ যেকোনও অনুষ্ঠানে যেমন একসঙ্গে আনন্দ করেছি৷ তেমনই দুঃখের দিনেও পাশে পেয়েছি৷ কিন্তু বর্তমানে আমাদের জীবনধারা কেমন যেন বদলে গেছে৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন৷ এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন যোগী আদিত্যনাথ৷ দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিভেদের অন্যতম ‘রূপকার’ও তাঁরা দুজনেই৷’’বেশ আক্ষেপের সুরে ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিভেদ তৈরি করাই মূল লক্ষ্য দু’জনের৷ এভাবে এই এলাকায় বাস করতে চান না বলেও মন্তব্য করেছেন গুলফাম আলি৷ গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দার বক্তব্য, আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের৷ রমজান পালন করছেন সকলেই৷
অনেকেই বলছেন, রোজা পালন করতেও নাকি বারবার বাধা পাচ্ছেন তাঁরা৷ মাদ্রাসায় মাইকের ব্যবহার বন্ধ করতে নাকি চাপ দেওয়া হচ্ছে তাঁদের৷ শান্তির জন্য অনেক মাদ্রাসায় বাধ্য হয়ে মাইকের ব্যবহার বন্ধও করে দিয়েছে৷ তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ যদিও যোগীর রাজ্যের ধর্মীয় মেরুকরণকে সমর্থন করেছেন৷ রাজনীতিকদের মতে, এমন সুকৌশলে হিন্দুত্ববাদকে সকলের মনে ঢকিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তাতেই নাকি এমন বিরোধিতা তাঁদের৷ তবে আবারও বিজেপি ক্ষমতায় আসলে নয়াবাস ছাড়ার কথা ইতিমধ্যেই ভেবে ফেলেছে মুসলিম ধর্মাবলম্বী গ্রামবাসীরা৷ সম্পাদনা : এইচ এম জামাল