লিহান লিমা: দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী শাসকদের সময়ের দুই দশক পেরিয়ে গেলেও গণতান্ত্রিক আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন দেশটির নাগরিকরা। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে, গণতন্ত্র পাওয়ার ২৫ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বৈষম্যপূর্ণ দেশ, এমনকি ১৯৯৪ সালের তুলনায় বৈষম্য এখন আরো বেশি প্রকট।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া জোনাসবার্গের একটি ছবিতে দেখা যায় রাস্তার দুই পাশের দুই ভিন্ন দৃশ্য। ছবির বাঁ দিকে শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত বৌবাসর্যান্ড, ডান দিকে ক্যায়া স্যান্ডস। যেখানে ধনী ও গরিবদের বসবাসের চিত্র প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে। বৌবাসর্যান্ডে সুইমিংপুল সহ বিশাল বাড়ি। অন্যদিকে কায়া স্যান্ডসে একের পর এক গাদাগাড়ি ঝুপড়ি ঘর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধনী ও দরিদ্রের ফারাক এখন বড় হয়ে গিয়েছে। ও দেশের রাজধানীতে এখনও শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গরা আলাদা আলাদা ভাবে থাকেন। মেশেন না। বর্ণবৈষম্য না থেকেও রয়েছে ভালোভাবে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ‘পিছিয়ে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকানরা কম সম্পদ, কম মজুরি, কম দক্ষতা নিয়েই পড়ে রয়েছেন। অন্যদিকে শ্বেতাঙ্গ ধনীদের সংখ্যা ক্রমেইট বাড়ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সবচেয়ে ধনীরা ১০ শতাংশ ও সবচেয়ে গরীবরা ৬০ শতাংশ। মোট অর্থের ৭১ শতাংশের মালিক ৭ শতাংশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ৫৫.৫ শতাংশ দরিদ্রতার মধ্যে বসবাস করেন যাদের মাসিক আয় ৮৩ ডলারেরও কম। সেখানে ২৫ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করেন, যাদের মধ্যে ৬৪.২ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ, ৪১.৩ শতাংশ মিশ্র, ৫.৯ শতাংশ ভারতীয় বা এশিয়ান ও ১ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ।
মজুরির সমীক্ষায় দেখা যায়, সেখানে শ্বেতাঙ্গদের বেতন, ১২ হাজার ২১৪ র্যান্ড, ভারতীয়/এশিয়ানদের ১১ হাজার ৯০০ র্যান্ড, মিশ্রদের ৪ হাজার ৮৩৪ র্যান্ড, কৃষ্ণাঙ্গদের ৪ হাজার ৪১৩ র্যান্ড।
দেশটিতে শ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যা, ১২ শতাংশ, ভারতীয়/এশিয়ান ৩ শতাংশ, মিশ্র ১১ শতাংশ ও কৃষ্ণাঙ্গ ৭৫ শতাংশ।