শিরোনাম
◈ টানা দুই দফা কমার পর আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম, ভরি কত? ◈ আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের বকেয়া প্রায় ৯০ কোটি ডলার! ◈ তথ্য-উপাত্ত সঠিক না থাকায় ফ্যাসাদ তৈরি হচ্ছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা ◈ চিকিৎসা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া সমস্যা নিরসন হবে না: প্রধান উপদেষ্টা ◈ বাতাসের মান যাচাইয়ে রাজধানীর ২৫ যায়গায় বসবে আধুনিক যন্ত্র: ডিএনসিসি   ◈ অবৈধ অভিবাসন বন্ধে বাংলাদেশকে সহযোগিতার প্রস্তাব ইতালির, আরও লোক নিতে আগ্রহী ◈ সারাদেশে ৫০০-এর বেশি ব্যক্তির একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে: এনআইডি ডিজি ◈ চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা: স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন ◈ বহুমূখি সংকটে দেশের শিল্প খাত ◈ সর্বোচ্চ লেনদেন পুঁজিবাজারে

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৫:৪০ সকাল
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৫:৪০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে দেখলে বোঝা যায় কেনসেক্যুলার হওয়াটা মানুষের জন্যই খুব জরুরি

গুলজার হোসেন উজ্জল

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে দেখলে বোঝা যায় কেন সেক্যুলার হওয়াটা মানুষের জন্যই খুব জরুরি। ক্রাইস্টচার্চ ট্র্যাজেডির পর তার এই এবং ট্রু মুসলিমদের আহত হৃদয়ে যে প্রশান্তির ঢেউ জাগিয়েছে সেটা আর কোনো কিছু দিয়ে সম্ভব হতো না। এভাবেই একটি সমাজ এগিয়ে যায়। বিভক্ত মানুষ এক হয়ে যায়। পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে। এক দল মানুষকে বিভক্ত করে, আরেক দল মানুষকে এক করে। পৃথিবীতে হিউম্যান রাইটসকে সবচেয়ে সম্মান করে যে রাষ্ট্রগুলো তার একটি নিউজিল্যান্ড? আমরা কী কেবল প্রধানমন্ত্রীর হিজাব পরাকে বাহবা দেবো নাকি সংবেদনশীল, সংস্কারহীন, মানবিক মুক্তমনকে?

একদল মানুষ প্রচার করেছে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুসলমান হয়ে গেছেন? কেউ কেউ বলছে নিউজিল্যান্ডে ইসলামের বিজয় হয়েছে? এসব কথা আসলে মানসিক দারিদ্র্য থেকে আসে, যা এ অঞ্চলের মুসলিমদের একটা বড় অংশের প্রধান অসুখ। তারা সেক্যুলারিজমের সৌন্দর্য উপলদ্ধি করতে পারে না। একজন মানুষ মুসলিম না হয়েও কেবল ভাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলিমদের পোশাক পরতে পারে সেটা তারা ভাবতেও পারে না। মূলত তাদের এ অসুখের ভেতরই লুকিয়ে থাকে হিং¯্রতা। তাদের কাছে পুরো ব্যাপারটা বাইনারি। হয় মুসলমান হও, হেজাব পর, নয়তো তুমি বিধর্মী।

একটা সেক্যুলার সমাজ মানুষকে মানসিকভাবে কতোটা নিরাপত্তা দিতে পারে তার উদাহরণ নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলো। ২০১৩ সাল থেকে সেখানে সমকামী বিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে সিদ্ধ? এলজিবিটিদের অধিকার সংরক্ষণে তারা অন্যতম পাইওনিয়ার। তারপরও সমকামকে ঘৃণা করা মুসলিমরাও সেদেশের নাগরিকত্ব পেলে দুনিয়ায় বেহেশতের স্বাদ পায়। এ রকম অনুভূতি কোনো মুসলিম দেশে গিয়ে পেতে দেখিনি। ব্যাপারটা শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির নয়, টাকা-পয়সা তো সৌদি আরবেরও কম নেই?এটা মানবিক মূল্যবোধের ব্যাপার। যার জন্য একটি সমাজকে লিবারেল হতে হয়। ইনক্লুসিভ হতে হয়।

একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করিÑকিছুদিন আগে ভারতে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে আমি ধুতি পরেছিলাম। আমার এই ধুতি পরিধানের উদ্দেশ্য ছিলো আমার গানের সময়কাল ও বিষয়বস্তুর সঙ্গে পোশাকের একটা সমন্বয় সাধন করা। আমি পোশাকের ভেতর দিয়ে এক ধরনের সম্প্রীতির কথাও বলতে চেয়েছি। আমাদের অভিন্ন সংস্কৃতির কথা বলতে চেয়েছিলাম। আমার সেই ধুতি পরিধানের ছবি দেখে এদেশের অনেক শিক্ষিত ধার্মিক মুসলমান আমাকে শুধু আক্রমণই করেননি, কেউ কেউ তাদের টাইম লাইনে আমাকে হেয় করে স্বতন্ত্র স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তাদের একজন মেডিকেল কলেজের শিক্ষক। আমার সরাসরি শিক্ষক না হলেও তাকে আমি সমীহ করে স্যার সম্বোধন করতাম। আমাদের সেই স্যাররা এখন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অতিথি বরণের ভারতীয় রীতি অনুযায়ী চন্দন ফোঁটা নিতে দেখে একজন ভ্রষ্ট রাজনীতিক জনসভায় গালি দিয়ে বলেছিলেন ‘তিলকওয়ালী মুখ্যমন্ত্রী’। এটা তো আমরা সবাই জানি যে, তিনি অসংখ্য মানুষের মনের কথা বলেছিলেন? তারা এমন কথাও বলে যে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মসজিদে মসজিদে উলুধ্বনি শোনা যাবে।

কিছুদিন পর আসবে পয়লা বৈশাখ। কোন কোন পোশাক পরা উচিত নয়, পয়লা বৈশাখের উৎসবে যাওয়া উচিত কিনাÑএসব নিয়ে শুরু হবে এদেশের তৌহিদী জনতার বয়ান। তারাই এই বয়ান দেবেন, যারা নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর মসজিদে যাওয়া, কুরআন তিলওয়াত শোনা, রেডিও টিভিতে আজান দেয়া নিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়েছেন? কেউ কেউ নিউজিল্যান্ডে ইসলামের বিজয় নিশান দেখতে পেয়েছেন। যা-ই হোক, এসব হিংসা ছড়ানো মানুষদের ভেতর একজনও যদি সেক্যুলার সমাজের গুরুত্ব বোঝে তাহলেই মঙ্গল! ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়