সৌদি আরব, কুয়েত এবং জর্ডানের বড় অংশে একটি শক্তিশালী ধুলিঝড়ের প্রভাব পড়েছে, যার ফলে ব্যাহত হচ্ছে যাতায়াত। এছাড়া আকস্মিক বন্যা এবং জরুরি স্থানান্তরের ঘটনাও ঘটছে।
সোমবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
প্রতিবেদন মতে, তিনটি দেশের কর্তৃপক্ষই ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে এবং আগামী দিনে আবহাওয়ার আরও অস্থিতিশীলতার বিষয়ে সতর্ক করেছে।
সৌদি আরবের মধ্যাঞ্চলে, আল কাসিম প্রদেশের বাসিন্দারা রোববার (৪ মে) ‘ধুলোর প্রাচীর’ নামে পরিচিত এক বিরল এবং নাটকীয় ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন, যা অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এর কারণে দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে এবং ব্যাপক নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ধুলিঝড়টি বিশাল ঢেউয়ের মতো এগিয়ে আসে। এসময় সূর্যের আলোও অনেকটাই আটকে যায়। ফলে দিনে বেলাতেই রাতের আঁধার নেমে আসার মতো পরিস্থিতির কথা জানান অনেকে।
কাসিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এবং আবহাওয়াবিদ আবদুল্লাহ আল মিসনাদ বলেন, এই দেয়ালগুলো (ধুলিঝড়ের) ২০০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতা এবং প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিমি গতিতে পৌঁছাতে পারে।
কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকতে, খোলা জায়গা এড়িয়ে চলতে এবং ভ্রমণ সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষ করে মহাসড়ক এবং উন্মুক্ত রাস্তায়।
কুয়েতেও তীব্র বাতাস এবং ঘন ধুলোর মেঘের প্রভাবে বিমান ও নৌ কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করে।
ঘণ্টায় ১০০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার কারণে কিছু এলাকায় দৃশ্যমানতা শূন্যে নেমে এসেছে। মিশর থেকে আসা দুটি বিমান সৌদি আরবের দাম্মামে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে শ্রমিক ও অবকাঠামো রক্ষার জন্য শুয়াইখ এবং শুয়াইবা বন্দরে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে কুয়েত বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জর্ডানে ঝড়ের প্রভাবে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে অনিয়মিত ও বিপজ্জনক আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাত, বজ্রঝড় এবং ধুলোর কারণে দৃশ্যমানতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।
জর্ডানের অন্যতম দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্র পেত্রায়, রোববার আকস্মিক বন্যায় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের কিছু অংশ প্লাবিত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ শত শত দর্শনার্থীকে সরিয়ে নেয়।
জানা গেছে, বন্যায় মা'আনের কাছে ওয়াদি আল নাখিলে একটি অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরের অংশ হিসেবে থাকা বেলজিয়ামের এক নারী এবং তার সন্তানের প্রাণহানি ঘটে।