নিজস্ব প্রতিবেদক : সঠিক পরিসংখ্যান বা তথ্য-উপাত্ত না থাকায় অধিকাংশ সময় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। দেশের বড় অর্থনীতিবিদেরাই এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছেন। কিন্তু এসব পরিসংখ্যান মারাত্মক ফ্যাসাদ তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘খাদ্যের বাজার, সরবরাহ ও দেশজ সক্ষমতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তফা কামাল, কাজী ফার্মসের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, এসিআই লিজিস্টিকসের (স্বপ্ন) এমডি সাব্বির হাসান নাসির, কোয়ালিটি ফিডসের গ্রুপ করপোরেট ও লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স পরিচালক শাফির রহমান, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) পারভেজ সাইফুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আকতার হোসেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, গত বছর দেশে আলু উৎপাদন হয়েছিল ১কোটি টনের বেশি। কিন্তু সেই আলুর দাম আবার ৯০ টাকা কেজির ওপরে উঠেছিল। হঠাৎ পরিসংখ্যান মিলছে না। তথ্য উপাত্ত সঠিক না থাকায় মারাত্মক ফ্যাসাদ তৈরি হচ্ছে। যা সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধান্বিত করে ফেলছে। কবে দেশের এই পরিসংখ্যান ঠিক হবে তা আমার জানা নেই। কারণ এটা আমার আওতার মধ্যে নেই।
উপদেষ্টা বলেন, সরকারি পরিসংখ্যানগুলোকে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হিসেবে গ্রহণ করি। অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেগুলো খুবই বিভ্রান্তিকর। এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন। সরকারি পরিসংখ্যান ঠিক করা খুবই প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। বিগত সময়ে সরকারগুলো ব্যয়ের মহোৎসব করেছে বলে মন্তব্য করেন শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, কৃষিপণ্যের সংরক্ষণের জন্য সরবরাহ শৃঙ্খল উন্নত করা ও এ খাতে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার তা কীভাবে করবে। কারণ, সরকার তো আগে ব্যয়ের মহোৎসব করেছে এবং এর মাধ্যমে নাগরিকদের ওপর চূড়ান্ত দায় তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, সরকারি ক্রয় কমিটিতে বিভিন্ন ধরনের (অতীতের) প্রকল্পের রেফারেন্স দেখি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ব্যয়ের ফিরিস্তি দেখি। তাতে মনে হয়েছে, (অতীতে) যেকোনো একটা খাত সৃষ্টি করে খরচ করতে পারাটাই একধরনের কৃতিত্ব মনে করা হয়েছিল। এটাই যোগ্যতার নিয়ামক ছিল যে, কে কত খরচ করতে পারে। কতভাবে দায় তৈরি করা যায় দেশের ওপর, নাগরিকদের ওপর সেটি করা হয়েছে।
দেশে খাদ্যনিরাপত্তাভিত্তিক একটি জাতীয় নীতি তৈরির পরামর্শ দিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বণ্টন ও মজুতব্যবস্থার জন্য দেশব্যাপী একটা ব্যবস্থা তৈরি করা প্রয়োজন। এটি রাজনৈতিক সরকারের সহায়তা ছাড়া রাতারাতি করা সম্ভব নয়। আমাদের মূল্যস্ফীতি পরিমাপের (পণ্যের) বাস্কেট বেশ বড়। আমি মনে করি, ১৭টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে আলাদা একটি ইনফ্লেশন ইনডেক্স থাকা উচিত।