শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:২৪ সকাল
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:২৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাঙালিদের রিলিফ খাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বের করে, রিলিফ দেয়ার সক্ষমতার দেশ হিসেবে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা : আবদুল মান্নান

নাঈমা জাবীন : শিক্ষাবিদ ও গবেষক আবদুল মান্নান বললেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা তাঁর চার মেয়াদের শাসনামলে একজন প্রধানমন্ত্রী থেকে পরিণত হয়েছেন একজন বিশ্বনন্দিত স্টেট্সম্যান বা রাষ্ট্রনায়কে। বিএনপি-জামায়াত জোটের নানা টালবাহানা সত্ত্বেও তিনি ১৫ই আগস্টের ঘাতকদের বিচারকাজ সমাপ্ত করেছেন। একাত্তরের ঘাতকদের প্রকাশ্য আদালতে বিচার করে রায় কার্যকর করেছেন। একটি ভিক্ষুকের দেশ থেকে দেশের মানুষের সহায়তায় দেশটাকে একটি উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে গেছেন। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন। যে বাঙালি রিলিফ নিতে অভ্যস্ত ছিল আজীবন, সেই রিলিফ খাওয়ার সংস্কৃতি থেকে তাদের বের করে এনে বাংলাদেশকে একটি রিলিফ দেওয়ার সক্ষমতার দেশ হিসেবে পরিণত করেছেন। সূত্র : কালের কণ্ঠ
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কোনো সম্মানজনক আইডেন্টিটি ছিল না। শেখ হাসিনা বিশ্বদরবারে দেশটাকে একটা আইডেন্টিটি দিয়েছেন। আগেও বলেছি, আবারও বলি, শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের ২৩ বছরে নানা নির্যাতন সহ্য করে প্রায় ১৪ বছর কারাভোগ করে দুবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে, সেই সব স্বপ্নের অনেক কিছুই এখনো অর্জনের বাকি আছে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার পূর্বশর্ত হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণ। এ কাজটি বাংলাদেশে এখনো করা সম্ভব হয়নি। এখনো এখানে ধর্মের নামে অধর্মের বেসাতি চলে। এখনো দেশের বিভিন্ন স্থানে অর্ধশিক্ষিত মোল্লারা সাধারণ জনগণের মাঝে হিংসা আর বিদ্বেষের বাণী প্রচার করে। দেশের সুষম উন্নয়ন সম্ভব নয়, যদি সমাজে চরম আর্থিক বৈষম্য বিরাজ করে। বাংলাদেশে এই বৈষম্য খোলা চোখে দৃশ্যমান। দুর্নীতি দেশের উন্নয়ন পেছন থেকে টেনে ধরে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর এক জনসভায় বলেছিলেন, দেশের খেটে খাওয়া শ্রমিকশ্রেণি দুর্নীতি করে না, করে সমাজের উচ্চবিত্তরা। দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর পর তাঁর এই বক্তব্য এখনো সত্য। শেখ হাসিনা বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা সব ধরনের দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থেকেছেনÑএই কথার সঙ্গে কেউ দ্বিমত করবেন না বলে বিশ্বাস করি। সেই কাজটি তো অন্য প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে বলা যাবে না। তাঁর আমলে দুর্নীতি তো একটি শিল্পে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু একজন শেখ হাসিনাকে দেখে দলের অনেক নেতা প্রকৃত শিক্ষা নিতে পারেননি। হতে পারেননি বিনয়ী। তাঁর শিক্ষকের গায়ের চাদর পড়ে গেলে তখন তিনি ভুলে যান যে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি নিজে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শিক্ষক প্রফেসর আনিসুজ্জামানের চাদর ঠিক করে দেন। ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরসঙ্গী হওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সঙ্গে তাঁর দুই শিক্ষক। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আর অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। আমার ওপর দায়িত্ব পড়ে তাঁদের দেখভাল করার। দেখা হলেই প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, তাঁর স্যাররা ঠিক আছেন তো। এমন প্রধানমন্ত্রী কোথায় পাওয়া যাবে? আমি লিখেছিলাম, ‘শেখ হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনা নিজে।’ বন্ধুবর মুনতাসীর মামুন লিখেছিল, ‘সব কিছুর বিকল্প আছে, শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।’ শহীদকন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘আমাদের জন্য আপনিই বাংলাদেশ।’ নুজহাতের এই কথার সঙ্গে দ্বিমত করার কী কোনো কারণ আছে? ১৯৭৫ সালের পর ত্রিশ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ তো হারিয়ে গিয়েছিল। সারা দেশে শুরু হয়েছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়ার নেতৃত্বে একাত্তরে পরাজিত জামায়াত-আলবদর-মুসলিম লীগের নেতা-সমর্থকদের উল্লাসনৃত্য। সেই উল্লাসনৃত্য থামাতে পেরেছিলেন শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ও পরবর্তী সময়ে সরকার গঠন করে। সেই পরাজিতরা এখন ঘাপটি মেরে আছে, কখন তাদের সরকার আবার ক্ষমতায় আসবে। তেমন রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ সামনে রেখে কী করে শেখ হাসিনার অবসরের কথা বংলার মানুষ মেনে নেবে?
নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বয়স কোনো বিষয় নয়। যোগ্যতা হচ্ছে আসল। শেখ হাসিনা যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা, তা তিনি তাঁর কর্ম দ্বারা প্রমাণ করেছেন। বর্তমানে তাঁর বয়স বাহাত্তর। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই মেয়াদ শেষ হলে তাঁর বয়স হবে সাতাত্তর। মালয়েশিয়ায় দেশের প্রয়োজনে বিরানব্বই বছর বয়সে মাহাথির মোহাম্মদ অবসর থেকে ফিরে এসেছেন। শেখ হাসিনার সুস্থতা আর দীর্ঘায়ুর জন্য দেশের কত মানুষ নিত্যদিন দোয়া করে, তা হয়তো তিনি জানেনই না। এত মানুষের ভালোবাসা আর দেশের মানুষের প্রত্যাশা ফেলে কোথায় যাবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অবসর নিয়ে অবশ্যই টুঙ্গিপাড়া যাবেন। তবে সেই সময় যে এখনো আসেনি। ইতিহাস আপনাকে যত না সৃষ্টি করেছে, আপনি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তার কয়েক গুণ বেশি। অবসরের বিষয়টা এখন তোলা থাকুক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়