নাঈমা জাবীন : কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন শুধু একটা শোক বা উৎসব পালন নয়, তা আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ ভাষার দিকে যদি চোখ না ফেরায়, যদি আমাদের ভাষা সংক্রান্ত আত্মজিজ্ঞাসায় উন্মুখ না করে, তাহলে এ দিনটি আমাদের কাছে কোনো সার্থকতা পায় না, নেহাতই অনুষ্ঠান হিসেবে আসে এবং চলে যায়। সূত্র : যুগান্তর
তিনি বলেন, নিজেদের ভাষা নিয়ে আমাদের প্রশ্নগুলো ঠিক কী হওয়া উচিত? বহু সম্ভাব্য প্রশ্নের মধ্য থেকে কয়েকটিকে বেছে বলি, প্রথম প্রশ্ন : আমার ভাষার অবস্থান ঠিক কোথায়? সে কী নিজে বিপন্ন? হলে কতোটা বিপন্ন, কোন্ কারণে, কোন্ কোন্ ভাষার দাপটে বিপন্ন? আর যদি নিজে বিপন্ন না হয় (বা হয়ও), তারও দাপটে কী কোনো ভাষা বিপন্ন হচ্ছে? হিসাব করলে দেখা যায়, পৃথিবীর বেশিরভাগ বড় ভাষা, বিশেষত আগেকার সা¤্রাজ্যবাদ এবং পরে অর্থনৈতিক সা¤্রাজ্যবাদ পোষিত ভাষা অন্য অনেক ভাষার ওপর দাপট দেখিয়েছে, এখনও দাপট দেখিয়ে চলেছে। এসব ভাষার নিষ্ঠুর আধিপত্যে অনেক ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, যে জন্য এগুলোকে কিলার লাঙ্গুয়েজও বলা হয়। ভাষা ধ্বংসের নাম কেউ কেউ (যেমন স্কুৎনাব কাঙ্গাস) দেন ‘ল্যাঙ্গুয়েজ মার্ডার’ বা ভাষাহত্যা। এই দাপুটে ভাষাগুলোর মধ্যে আছে ইংরেজি, স্প্যানিশ, আরবি, রুশ, পোর্তুগিজ এবং আরও কিছু ভাষা। এখন হয়তো সবাই সমান দাপুটে নেই, ইংরেজি সবার ওপরে উঠে এসেছে। আর যেহেতু পৃথিবীর মাত্র ৪ শতাংশ লোক মোট চার হাজার ভাষা বলে, ওই সব ছোট ছোট ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাগুলোই সবচেয়ে বেশি বিপন্ন, তারাই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে।
আপনার মতামত লিখুন :