আশিক রহমান : গবেষক ও শিক্ষাবিদ যতীন সরকার বলেছেন, আমি বিয়াল্লিশ বছর শিক্ষকতা করেছি। এই সময়ে লক্ষ্য করেছিÑ দুঃখের সঙ্গেই বলতে হয় আমাদের শিক্ষিত লোকেরা, এমনকি বাংলা সাহিত্য নিয়ে যারা পড়াশোনা করেছেন, ডিগ্রি নিয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই বাংলা অক্ষর সবগুলো চিনেন না। কথাটা শুনতে খুবই খারাপ লাগতে পারে বা শোনা যেতে পারে। কিন্তু এটা আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সংযুক্ত অক্ষরের ব্যবহার, মাত্রার ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা শিক্ষিত লোকদের অনেকেরই নেই। কাজেই এই যখন অবস্থা তখন ভাষার ব্যবহারে যে কি নৈরাজ্য হবে সেই সম্পর্কে আর কিছু না বললেও চলে। এই ভাষার নৈরাজ্যেই হচ্ছে আমাদের মানসিক নৈরাজ্যের প্রতিফলন। ভাষা নৈরাজ্যের কারণ, ছেলেবেলা থেকেই যেভাবে বাংলা পড়ানোর দরকার সেভাবে পড়ানো হয় না। আর যারা শিক্ষক হয়ে যান তারা না পড়েই শিক্ষক হন! তাদের হাত ধরে অজ্ঞতা বহুগুণ বাড়বে। এখন তাই হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জাবে যতীন সরকার বলেন, ভাষার সঠিক ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন একটা সঠিক, সচেতনতামূলক আন্দোলন। যারা লিখেন, গণমাধ্যম যদি এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা গ্রহণ করে, গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা যদি সচেতন হন ভাষা ব্যবহার সম্পর্কে। এবং এই সচেতনতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যদি একটা আন্দোলন সৃষ্টি করেন। এবং সবাইকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য যদি একটা আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি সাবই তাহলে ভাষার সঠিক ব্যবহার সম্ভব। তা করতে না পারলে তা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বাংলা একাডেমির ওপর সব দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। বাংলা একাডেমি কিছু কিছু কাজ। তবে বাংলা একাডেমি সবকিছু করতে পারে না। এখানে দায়িত্বটা শিক্ষা বিভাগকে গ্রহণ করতে হবে সবচেয়ে বড় করে। শিক্ষা ব্যবস্থার নৈরাজ্য দূর না করতে পারলে ভাষার নৈরাজ্যও দূর হবে না। এখানে আমরা কেউ দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারি না। বিশেষ করে শিক্ষা বিভাগ।