শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:২৫ সকাল
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘অপরাধীকে অপরাধী বলিও না’ এরকম নির্দেশনা মঙ্গলজনক নাও হতে পারে

পুলক ঘটক : কয়েক বছর আগের কথা। আমি মিরপুর ১৪ নাম্বার বিআরটিএ কার্যালয়ের পিছনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। দেখলাম কয়েকটি ছেলে দলবদ্ধভাবে আরেকটি ছেলেকে ফুটপাতে ফেলে মারছে। সে মারের কি নির্দয়তা ! মাটিতে পড়ে থাকা ছেলেটির হাত পা ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে থেতলে দিচ্ছে। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যাওয়ার সাহস কারও হচ্ছেনা। যারা এই ভয়ঙ্কর কাজটি করছিল তাদের একজনেরও বয়স ১৩/১৪’র বেশি হবেনা। এতোটুকু শিশু এতো নিষ্ঠুর কেমনে হয়? ইভটিজিং কিংবা পথে ঘাটে মেয়েদের ওপর যৌননীপিড়নে ১৫ থেকে ১৯ বছরের ছেলেদেরই বেশি দেখা যায়। সংঘবদ্ধ কিশোর অপরাধীরা আরেকটি শিশুকে হত্যা করেছে - এরকম সংবাদের কমতি নেই। ফেসবুক থেকে পাওয়া

হাইকোর্ট একটি আদেশে বলেছেন, ১৮ বছরের কম বয়সের কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তার নাম, ঠিকানা, পরিচয় বা ছবি সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবেনা। বিচার চলাকালে যেমন প্রকাশ করা যাবেনা, বিচারের পরেও তা প্রকাশ করা যাবেনা। শিশু-কিশোর অপরাধীদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে শব্দচয়নে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আঠারো বছরের কম বয়সী কেউ অপরাধে জড়িত হলে তার ক্ষেত্রে ’অপরাধী’, ‘অভিযুক্ত’, ‘দন্ডিত’- এ জাতীয় কোনো শব্দ ব্যবহার করা যাবেনা।

হাইকোর্টের এই আদেশে উন্নত মানবিকতার ছোঁয়া আছে। তবে বিষয়টি নিয়ে শঙ্কাও আছে। অপরাধে জড়িত কাউকে শনাক্ত করার সুযোগ কেড়ে নেওয়া হলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে। তাছাড়া কোনো অভিযুক্তের বয়স ১৮ বছরের কম কিনা- সেটাও প্রমাণ সাপেক্ষ। বিতর্ক থাকলে আদালতে প্রমাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা কাউকে প্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্ত হিসেবে সাব্যস্ত করতে পারবনা। এরকম বাস্তবতায় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মিডিয়া সংগঠনগুলোর উচিত সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা এবং মামলাটি কনটেস্ট করা। সরকারপক্ষের উচিত হবে মামলায় সকল দিক বিবেচনা করে সর্বোচ্চ আদালতে যথাযথ যুক্তি উপস্থাপন করা। এই মামলায় চুড়ান্ত রায় দেওয়ার আগে সমাজবিজ্ঞানী, অপরাধ বিজ্ঞানী, শিশু মনোবিজ্ঞানী, মিডিয়া বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়া উচিত। সবার মতামত বিশ্লেষন করে একটি উপযুক্ত আদেশ আদালত দিতেই পারে।

আমার প্রারম্ভিক মত হল, নারী ও শিশু ভিকটিমের নাম পরিচয় প্রকাশ থেকে বিরত থাকার বিধান ঠিক আছে। তবে নারী ও শিশু অপরাধীর নাম পরিচয় প্রকাশ করা যাবেনা - এটা আমার কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়না। “কানাকে কানা বলিও না, তাহার মনে দু:খ পায়” “খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না, তাহার মনে দু:খ পায়” - এই শিক্ষা ঠিক আছে। কিন্তু “অপরাধীকে অপরাধী বলিও না” -এরকম নির্দেশনা সমাজে প্রতিষ্ঠা পেলে তা মঙ্গলদায়ক নাও হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়