শাহনেওয়াজ শাহীন : ব্রিটিশ শাসনামলে ‘ভালগারাইজেশন অব নেমস’ ছিলো ইংরেজ সাহেবদের একটা অতীব সাধারণ বদভ্যাস। ট্রাম্প সাহেব যে শুরু থেকেই এই চর্চার বাইরে ছিলেন তা কখনোই নয়; হয়তো আমাদের প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্র নেপাল আর ভুটানকে ‘নিপ্পল’ আর ‘বাটন’ বলে ডাকায় খবরটি আমাদের মনোযোগকে বেশি সম্পৃক্ত করেছে। তাও ভালো, এমন সমালোচনায় শরিক হয়ে অন্তত এটি প্রতীয়মান হল যে, বিকৃত নাম এখন আর গ্রহণযোগ্য নয়, সেটা ভিনদেশি প্রতাপশালী যেকোনো সাহেবের মুখ থেকেই বের হোক না কেন।
এখন আসুন নিজেরা একটু নিজেদের দিকে তাকাই। যখন কিছু দুঃসাহসী অভিযাত্রী ঊনিশ শতকের শেষভাগে জিঞ্জিরা নামে খ্যাত একটি দ্বীপে যাত্রা করে মানব বসতির সূচনা করলো এবং নিজেরা উক্ত দ্বীপের ‘নারিকেল জিঞ্জিরা’ নামের প্রচলন ঘটালো তখন ইংরেজ সাহেবদের ভূ-জরিপ দল এখানে এসে অধিবাসীদের দেয়া নাম পছন্দ করলেন না! তারা নাম দিলেন ‘সেন্টমার্টিন’। সাহেবরা যা দেয় তাই অভিজাত। আমরা গোগ্রাসে গ্রহণ করলাম। একইভাবে চট্টোগ্রাম নামের প্রচলন ‘চিটাগাং’ করে ফেললাম। কেন জানি ঢাকাকে ‘ডেক্কা’ হিসেবে মেনে নিতে পারিনি, এটা গবেষণার দাবি রাখে। সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে, ইংরেজিতে বক্তব্য দেয়ার সময় যখন ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি আসে তখন আমরা ‘ব্যংগাড্যাশ/ ব্যংগলাড্যাশ/ ব্যংলাড্যাশ’ বলে উচ্চারণ করে চলে যাই। ভাবখানা এমন, এসব শব্দগুলো বাংলাদেশের ইংরেজি নাম, তাই বাংলাদেশকে এভাবেই উচ্চারণ করতে হবে, সাবলীলভাবে উচ্চারণ করা যাবে না, কারণ ইংরেজ সাহেবরা আমার দেশের নাম এভাবেই উচ্চারণ করে ইংরেজিতে কথা বলার সময়!
আসুন এবার একটু নিজের ভাষার প্রতি মনোযোগী হই, নিজেরা যেন একেকজন ট্রাম্প না হই। ফেসবুক থেকে