সালেক খোকন : এখনো আমরা দেখি অনেক প্রকাশক বই বের করছেন মেলাকে ঘিরে। এই দায় লেখকেরও। মেলা ছাড়া বাকি সময়টাতে অধিকাংশ প্রকাশকই খুব কম বই বের করে। এতে মেলাকে ঘিরে নতুন বই প্রকাশের তোড়জোড়ে সম্পাদনার কাজটি একেবারেই হয় না। ফলে রঙচোঙা প্রচ্ছদ নিয়ে যে বইটি মেলায় প্রকাশিত হয়, সেটি পাঠককে তেমন আন্দোলিত করে না। বরং বই কিনে পাঠক প্রায়ই ঠকে যায়। এভাবে পাঠকও বইমেলায় মানসম্মত বই কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
যেকোনো লেখক তার পা-ুলিপিকে শ্রেষ্ঠ মনে করে। ওই পা-ুলিপির বিষয় বিবেচনা ও সম্পাদনা করে সেটিকে পাঠ উপযোগী করে উপস্থাপনের দায়িত্বটি থাকে প্রকাশকের। তা না হলে পাঠক প্রতারিত হবে এবং একসময় বইমেলা তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হবে।
দেশে সত্যিকারভাবে কী পাঠক বেড়েছে? কিংবা আমরা কী পারছি পাঠক তৈরি করতে? এই দায় যেমন রাষ্ট্রের, তেমনি প্রকাশকের এবং লেখকেরও। বইমেলায় বই বেরিয়েছে এমন নব্বইভাগ লেখকই নিয়মিত পত্রিকায় লিখেন না। ফলে লেখার মাধ্যমে পাঠক তৈরির যে চেষ্টা, তা থেকে তারা পিছিয়ে থাকেন। এমন লেখকের বই শুধু তার পরিচিতজনদের হাতেই সেলফি তোলার প্রয়োজনে শোভা পায়। প্রতিবছরের মতো এবারও বইমেলায় হাজার হাজার বই হয়তো প্রকাশিত হবে। কিন্তু তার মধ্যে কতোটি বই মানসম্পন্ন বাংলা একাডেমির উচিত সেটিও বের করে প্রকাশ করা। একইভাবে বইয়ের বিষয় নির্বাচন ও সম্পাদনা না করা হলে যতো বড় বইমেলার আয়োজনই করা হোক না কেন, শিল্প-সাহিত্যের তেমন কোনো উন্নতি ঘটবে না। বরং পাঠক একসময় প্রতারিত হওয়ার ভয়ে বইমেলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর এর দায় বহন করতে হবে লেখক, প্রকাশক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। তাই এ বছর বইমেলায় আমাদের প্রত্যাশা একটাই বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে ভালো মানের বইয়ের সংখ্যাও বাড়ুক। ভালো মানের বই থাকুক বইমেলায়। লেখক ও গবেষক