নাঈমা জাবীন : কবি, গবেষক ও ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্ব শুরু এবং শেষ। আপাতদৃষ্টিতে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভোট পর্ব অনুষ্ঠিত হলেও কিছু কেন্দ্রে সহিংসতার ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গেছে। পরিণামে সেদিন ভোটদানে নৈরাজ্যের সহিংসতায় ১৭ ব্যক্তির মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে প্রতিটি দৈনিক পত্রিকায়। নির্বাচন কমিশনের মতে, ‘এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনাÑভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ কমিশন সন্তুষ্ট তাদের নির্বাচন পরিচালনার দক্ষতায়। সূত্র : কালের কণ্ঠ
তিনি আরও বলেন, এ সন্তুষ্টির প্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের অধিকাংশ বুদ্ধিজীবী ও সুশীল নাগরিকের মতামতে, বিবৃতি ও ব্যক্তিগত মন্তব্যে। গণতন্ত্রী, জাতীয়তাবাদী, এমনকি প্রগতিবাদী নামে পরিচিত একাধিক অধ্যাপক, বুদ্ধিজীবীর মতে, নির্বাচন স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাদেরই দু’একজন লিখেছেন যে, ভোট দিতে গিয়ে ভেতরের অবস্থা তার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। কোনো অনিয়ম চোখে পড়েনি।
কিন্তু যেসব ঘটনা তাদের মনে প্রশ্নের উদ্রেক করেনি, তা হলো এই শান্ত-নীরব পরিবেশে বিরোধী দলীয় পোলিং এজেন্ট নেই কেন? তাদের কী ভোট প্রতিযোগিতায় কোনো আগ্রহ নেই? তাদের কী নির্বাচনে আগ্রহ নেই, ভোটে জেতার কোনো ইচ্ছা নেই? তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ কী নিতান্তই নিয়ম রক্ষার খাতিরে? কিন্তু তাদের রাশি রাশি অভিযোগ ও প্রতিবাদ তো এমন কথা বলে না।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা একদিকে প্রশ্নবিদ্ধ, অন্যদিকে কোনো কোনো দৈনিক পত্রিকার ভাষ্যমতে, হাস্যকর। পোলিং বুথে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিধির উপস্থিতি ঐতিহ্যবাহী রীতি, বলা যায়, প্রচলিত রীতিনীতিসম্মত এবং তা দলীয় নির্বাচনের স্বার্থবাহী প্রশ্ন, সেক্ষেত্রে তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকবে কেন? ঘটনাগুলো রহস্যময়।
দলের প্রতিনিধি কারো কারো মতে, তাদের আসতে দেয়া হয়নি। কাউকে কাউকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছেÑএমন অভিযোগও রয়েছে প্রতিপক্ষ থেকে।
অন্যদিকে প্রশ্ন, ভোটদান প্রক্রিয়ায় এতো অনিয়মই যদি ঘটে থাকবে, তাহলে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ যথাস্থানে সেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ পরিবেশন করেনি কেন? ঘটনার ব্যাপকতাদৃষ্টে সেদিনই তথ্য-উপাত্তসহ তারা সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করে সর্বসমক্ষে নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেয়নি কেন? নির্বাচন শেষ হওয়ার দিন কয়েক পর সে প্রক্রিয়া শুরু করা দূরদর্শী বিচক্ষণতার পরিচয় বহন করে না।