শিরোনাম
◈ আইসিসি উ‌ত্তে‌জিত, পা‌কিস্তান ক্রিকেট দল কড়া শাস্তির মুখে পড়তে পা‌রে ◈ নি'ষিদ্ধ দলের লোককে বাসা ভাড়া না দিতে পুলিশের মাইকিং! (ভিডিও) ◈ নারীদের লেখা বই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম থেকে সরানোর নির্দেশ তালেবানের, যৌন হয়রানি নিয়েও পড়ানো নিষেধ ◈ ঢাকাসহ বি‌ভিন্ন জেলায় আওয়ামী লী‌গের কর্মকা‌ণ্ডে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে?  ◈ টেকনাফের পাহাড় থেকে নারী শিশুসহ ৬৬ জন উদ্ধার! ◈ খেলাফত মজ‌লি‌সের মামুনুল হক হঠাৎ আফগানিস্তান সফরে কেন? ◈ শ্রীলঙ্কার কা‌ছে আফগা‌নিস্তান হে‌রে যাওয়ায় সুপার ফো‌রে খেলার সু‌যোগ পে‌লো বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা 

প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৮:০৭ সকাল
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৮:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তরুণ প্রজন্মের ভরসা শেখ হাসিনা

দীপক চৌধুরী : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জোটগুলোর এখন একমাত্র লক্ষ্য নির্বাচন। জনগণ যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারে এমনটিই প্র্যতাশা ভোটারদের। জনগণ সচেতনও। পাঁচ বছর ধরে যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে এর প্রধান দিক হচ্ছে ভোটারদের অংশহণ। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন তখনই স্বার্থক হবে যখন ভোটারেরা মন খুলে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কার্যক্রম বিবেচনায় এলক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে চলছি।
আমরা জানি, নতুন প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ করতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। তরুণ প্রজন্মের একাংশকে দীর্ঘ সময় ধরে করা হয়েছে প্রচণ্ড কলুষিত ও দূষিত ইতিহাসে। তরুণ প্রজন্ম কলুষমুক্ত করতে হবে ধাপে ধাপে, পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হবে ঐক্যমত। সংঘাতের রাজনীতি মাঝমধ্যে আমাদের আতঙ্কিত করে। তবে প্রত্যাশিত উন্নয়নে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই। এটা এখন প্রমাণিত যে, নতুন ভোটারেরা অগ্রগতি ও উন্নয়নের পক্ষে। তরুণরা এখন অপ্রতিরোধ্য শক্তি।
সম্প্রতি ৩০৭ জন (৭ ডিসেম্বর,২০১৮) সাবেক আমলা আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে মাঠে নেমেছেন। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সংহতি প্রকাশ করেছেন। এরমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এ আর খান, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সাবেক মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক মাসুদ আহমেদ ও সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মেসবাহ উদ্দিন, সাবেক সচিব ও কবি শফিক আলম মেহেদীসহ তিনশতাধিক কর্মকর্তার সংহতি প্রকাশ বিশেষ ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে। এর আগে সাবেক শতাধিক সেনাকর্মকর্তার দলে যোগদান ও সংহতি প্রকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্য্যপূর্ণ। তরুণ-তরুণীদের কাছে এর আলাদা গুরুত্ব বা মাত্রা রয়েছে নিঃসন্দেহে। অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, উন্নয়ন ও অগ্রগতির সঙ্গে যুক্ত তরুণ-তরুণীদেও জন্য যুব প্রশিক্ষণ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, তাদের আত্ম-কর্মসংস্থান ছাড়াও পরিবারভিত্তিক কর্মসূচি এতো দ্রুত গতিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যা অবিশ্বাস্য। আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার বলেছিলেন যে, তিনি এবং তাঁর দল চান সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। তারপরও এ বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে দুষ্টদের মধ্যে সংশয় ছিল। শেষ পর্যন্ত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো দেশ, গোটা বিশ্ব। আওয়ামী লীগ- জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, জেপি অর্থাৎ সবগুলো দলই সুন্দর নির্বাচন চায়। তবে বিএনপি চায় কিনা এই প্রশ্ন উঠছে। এই ঐতিহাসিক ডিসেম্বর মাসে, বিজয়ের মাসে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামী কী তা হতে দেবে? বিএনপি তো ইতিমধ্যেই জামায়াতকে ২২টি আসন দিয়েছে। তারা নির্বাচন করবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। এর বাইরে তারা ৮/১০টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবে। এই বিষয়টি সর্বত্র এখন আলোচিত হচ্ছে। দৈব-দুর্বিপাক বা কোনো অলৌকিক ঘটনা বা অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির উদ্ভব না ঘটলে ৩০ ডিসেম্বর সব দলের অংশগ্রহণেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার অতীতের তুলনায় সবচেয়ে বেশি তরুণ ভোটার অংশগ্রহণ করবে ভোট প্রয়োগরে মাধ্যমে। বিশ্ব অগ্রগতি ও রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বাংলাদেশকে সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে তারুণ্য এক বিশেষ শক্তি। এটা অবিসংবাদিত সত্য যে, তারুণ্যশক্তিই আমাদের সম্পদ। আর তরুণরা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন, তাদের ভরসার জায়গা শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশ দিয়েছেন আর তারই সুযোগ্যকন্যা শেখ হাসিনা উন্নয়ন আর তারুণ্যের অধিকারগুলোকে সম্মুখে নিয়ে এসেছেন। মেধা, শ্রম ও সৃজনশীলতা জননেত্রী শেখ হাসিনার চারিত্রিক দৃঢ়তার এক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। বিশ্বে তাঁর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল। তিনি নিজে যেমন দূরদর্শীসম্পন্ন তেমনি দেশের জন্য আত্মনিবেদিত। মেধাবী ও দূরদর্শীসম্পন্ন মানুষকেও পছন্দ তাঁর। আমরা জানি, সঠিক স্থানে যোগ্য ব্যক্তি ছাড়া কাক্সিক্ষত অগ্রগতি সম্ভব নয়। সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম একটি সুসিদ্ধান্ত মো. নজিবুর রহমানকে মুখ্যসচিব নিয়োগ করা। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি মহাসড়কে টেনে নিতে হলে দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ, জনগণ ও বুদ্ধিদীপ্ত সহযোগী দরকার। মো. নজিবুর রহমান সুশাসন ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার দৃষ্টিভঙ্গির একজন সুযোগ্য, গুণী ও সুদক্ষ মানুষ। আমরা জানি, ইস্পাত কঠিন মনোবলে পর্বতসম বাধা ডিঙ্গিয়ে ক্রমেই এগিয়েছেন শেখ হাসিনা। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের ঝা-া উড়িয়েছেন। রাজনীতির কঠিন ময়দানে জাতির জনকের এই কন্যা বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সময়ের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কারণেই আজ টেকসই উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দশ বছরে দুঃসাহসী নেতৃত্ব দিয়ে দেশের জনগণকে যেমন আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছেন ঠিক তেমনি স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এক বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করতে সমর্থ হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি এবং তা বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। বহুল আলোচিত পদ্মাসেতু নির্মাণ, বিনামূল্যে বই বিতরণ, সমুদ্র সীমা বিজয়, সারাদেশে মডেল মসজিদ নির্মাণ, রাজধানীসহ সারাদেশে ফ্লাইওভার নির্মাণ, ছিটমহল সমাধান, বিশ্ব অটিজম আন্দোলন নেতৃত্বে বাংলাদেশ। দশ বছর আগেও নারীরা দারিদ্র্যের কষাঘাতে নিমজ্জিত ছিল। এই অবস্থা ছিল প্রতিক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। সত্যিকার অর্থেই নারীর ক্ষমতায়ন দৃশ্যমান। আমরা দেখতে পাই প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, সংসদ উপনেতা, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নারী। এখন দেশে ১০৬ উপজেলা প্রশাসন চালান নারীরাই। ১৮ জন এডিসি, ৭জন ডিসি, প্রায় ১০জন সচিব নারী। বিভিন্ন বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ পদে নারী। পুলিশ, র‌্যাব, বিচার, প্রশাসনেও নারী। দেখতে পাই, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মতো কৃষিনির্ভর ও শিল্পকাক্সিক্ষত দেশের জন্য সব সময়ই উন্নত প্রযুক্তির লাগসই ব্যবহার উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে। পুঁজি ও শ্রমের বর্ধিত দক্ষতার সাথে প্রযুক্তির সার্বিক প্রয়োগ না থাকলে উন্নয়নের গতি মন্থর হতে বাধ্য। তাই বাংলাদেশকে একবিংশ শতাব্দির দারিদ্র্য বিমোচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়ার ক্রমাগত চেষ্টা শেখ হাসিনার। তথ্য-প্রযুক্তিই বাংলাদেশের সমৃদ্ধির সোপান বা মহাসড়ক। ইন্টারনেট প্রযুক্তির ফলে গোটা বিশ্ব আজ একটা বিশ্বগ্রামে পরিণত হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতি পাগলা ঘোড়ার গতিতে ছুটে চলেছে। তাই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর আন্তরিকতার প্রমাণ আমাদের সামনে। তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ বিশ্বমানের দেশে পরিণত হবার সঙ্গে সঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সংযোজন করতে পারায় নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে । কিছুদিন আগে সাংবাদিক হিসিবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের ছিলাম। ডেমোক্রেটিক বাজেট মুভমেন্ট (ডিবিএম) ও অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায়বিচার সহায়ক বাজেট চাই।’ পক্ষে-বিপক্ষের তরুণ বক্তারা বাজেটকে জনগণের চাওয়া-পাওয়ার আলোকে অত্যন্ত চমৎকারভাবে উপস্থাপন করলেন যে, উপস্থিত অনেকেই হয়তো অবাক হয়েছেন। বাজেট প্রক্রিয়া সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রাখেন এমন তরুণরা সমাজের অন্যান্য মানুষকেও এ বিষয়ে সচেতন করে তুলতে পারবে। আর এর ফলে বৃহত্তর অর্থে জনগণের মধ্যে বাজেট বিষয়ে সচেতনতা বাড়বে এবং অংশগ্রহণমূলক সুশাসন জোরদার হবে। প্রতি অর্থবছরে একটি বাজেট ঘোষিত হয়। এই দেশের জনগণের কল্যাণের স্বার্থে পেশ করা এই বাজেট ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারি আমরা। বাজেট পেশ করার দিন তরুণরা ‘ফেসবুক লাইভ’ চালু রেখে বাজেটের ওপর তাৎক্ষণিক জনপ্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করে সামাজিক মাধ্যমে যুক্ত করতে পারে।
লেখা শুরু করেছিলাম রাজনীতি ও নির্বাচন দিয়ে। নির্বাচনি প্রচার শুরু হওয়ার পরই দেশের কয়েকটি অঞ্চলে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। দেশকে ধ্বংস এবং অরাজকতার দিকে ঠেলে দেওয়া কারো কাম্য নয়। শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়া কোনো অবস্থায় চায় না তরুণরা। তারা প্রতিশোধমূলক বা প্রতিহিংসামূলক কাজে বিশ্বাসী নয়।
লেখক : উপ-সম্পাদক, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, কলামিস্ট ও ঔপন্যাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়