আমাদের সময় : শ্রীলংকার পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশটির স্পিকার কারু জয়সুরিয়া। গতকাল রবিবার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনাকে লেখা এক চিঠিতে বিক্রমাসিংহেকে দেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেন জয়সুরিয়া। একই চিঠিতে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্টের কার্যক্রম বন্ধে সিরিসেনা যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটিও পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার। এদিকে গতকাল সিরিসেনা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের বিষয়টিকে সম্পূর্ণ সাংবিধানিক বলে বর্ণনা করেন। খবর আলজাজিরা, ডেইলি মিরর, আইএল ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
লংকান প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা গত শুক্রবার আকস্মিকভাবে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করেন। একই সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ করান। কিন্তু বিক্রমাসিংহে তার এ বরখাস্তকে বেআইনি ও অবৈধ আখ্যা দিয়ে নিজেকে দেশটির বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাবি করেন এবং পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য অধিবেশন আহ্বান করেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সিরিসেনা পার্লামেন্টের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করায় সংকট গভীর হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে চিঠি লেখেন স্পিকার কারু জয়সুরিয়া।
চিঠিতে তিনি বলেন, আমি মনে করি সংসদের সব সদস্যের অধিকার সংরক্ষণ করা আমার গুরুদায়িত্ব। বিশেষ করে দেশ যখন রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটে পড়ে। দেশে এখন সেই সংকট দেখা দিয়েছে। সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার আর্জি জানিয়ে রনিল বিক্রমাসিংহের কাছ থেকে আমার কাছে অনুরোধ এসেছে। গণতান্ত্রিক উপায়ে অন্য কেউ প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী। আমি মনে করি, তার অনুরোধ গণতান্ত্রিক ও ন্যায্য। সরকারপ্রধান হিসেবে আমি আপনাকে তার দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ করছি। একই চিঠিতে তিনি ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্ত পুনর্র্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তা না হলে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এবং বিদেশে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত জয়সুরিয়া হলো বিক্রমাসিংহের ইউনাইনেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) সংসদ সদস্য। এ ছাড়া বর্তমান সংসদে বিক্রমাসিংহের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখনো বেশি। ২২৫ আসনের মধ্যে ইউএনপির রয়েছে ১০৬, অন্যদিকে সিরিসেনা জোটের রয়েছে ৯৫ আসন।
এদিকে শ্রীলংকার প্রতিবেশী দেশ চলমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, কোনো সরকারি বিবৃতি না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে রাজাপাকসের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় কিছুটা নাখোশ হতে পারে দিল্লি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে দেশের সংবিধান মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :