সুশান্ত সাহা : রাত পোহালেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। সোমবার সন্ধ্যার আগেই সব ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ সব নির্বাচনি সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে। কে হবেন গাজীপুরের নতুন নগরপিতা সেই আলোচনা এখন সর্বত্র। নির্বাচনে প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার। ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজীপুরের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে এই ভোটগ্রহণ কার্যক্রম। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও ভোটগ্রহণ শেষ না হলে কেন্দ্রের চৌহদ্দির মধ্যে অবস্থানরত ভোটাররা নির্ধারিত সময়ের পরেও ভোট দিতে পারবেন। ভোটগ্রহণ শেষে শহরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে স্থাপিত রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। কয়েকটি সিটি করপোরেশনের মতো গাজীপুরেও ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। এছাড়া তিনটি কেন্দ্র থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায়।
নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য রোববার থেকেই মাঠে নেমেছে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১১ হাজার সদস্য। ২৯ প্লাটুন বিজিবির পাশাপাশি কাজ করবে র্যাবের ৫৮টি, পুলিশের ৫৭টি ভ্রাম্যমান টিম, ২০ টি স্ট্রাইকিং ফোর্স।
এর আগে রোববার, মধ্যরাতে শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী প্রচার শেষ হওয়ার পর সোমবার বিকেল পর্যন্ত প্রার্থীদের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। দিনভর নিজ বাসাতে দলীয় শুভানুধ্যায়ী ও অনুসারীদের সাথে কুশল বিনিময় করে সময় কাটান তারা।
শেষদিনের প্রচারণায়, জয়ী হলে আধুনিক গাজীপুর নগরী গড়ে তোলার প্রত্যয় জানান আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।
অন্যদিকে, সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দীন সরকার অভিযোগ করেন, তার কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতারসহ নানা হয়রানি করা হচ্ছে। তারপরও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ভোটারদের ভোট দিতে আসার আহবান জানান তিনি। সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদও জানান তিনি।
এদিকে, নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচন উপলক্ষ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় মঙ্গলবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
২০১৩ সালে গঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আয়তন ৩২৯ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে ৫৭টি সাধারণ এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড বিশিষ্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭ জন। এর মধ্যে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫ জন পুরুষ এবং ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন নারী ভোটার। নির্বাচনে মেয়র পদে সাত জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী গত ১৫ মে একসঙ্গে দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু আইনি জটিলতায় পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন ২৬ জুন নতুন করে গাজীপুর সিটির নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে।