ইত্তেফাক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সামনে দলের তৃণমূলের নেতারা ক্ষোভের কথা অকপটে বর্ণনা করলেন। গতকাল শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলের তৃণমূলের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন তারা। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন এবং অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিতে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তৃণমূল নেতারা বলেন, জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগকে হারানো যাবে না। তবে উল্লিখিত দুই সমস্যার সমাধান না হলে আওয়ামী লীগকে হারাতে আওয়ামী লীগই যথেষ্ট। তৃণমূলের একজন নেতা বলেন, ‘অনুপ্রবেশ ঠেকানো না গেলে নৌকার সলিল সমাধি হবে।’
বর্ধিত সভায় দলটির ৮টি বিভাগ থেকে আটজন জেলা নেতা বক্তব্য রাখেন। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ কোন্দলের কথা তুলে ধরে তা নিরসনে কেন্দ্রীয় টিম গঠনেরও প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যা আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে দলের কোন্দল। তৃণমূলে একই সঙ্গে কর্মসূচি পালনের কোনো পরিবেশ নেই। দলের নেতারা একই মঞ্চে উঠেন না। কেউ কারো চেহারাও দেখতে চান না। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগকে হারানোর জন্য আওয়ামী লীগই যথেষ্ট।’জিয়া আর মোশতাকের প্রেতাত্মা নৌকার ওপর ভর করেছে
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকি বিল্লাহ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, নতুন করে অনেকে নৌকায় ওঠার কারণে আমাদের পশ্চােদশ ভিজে যেতে শুরু করেছে। এটা অব্যাহত থাকলে নৌকার সলিল সমাধি হবে।
আরো পড়ুন : গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রচার শেষ হচ্ছে আজ
পদ্মা সেতুর নাম শেখ হাসিনার নামে করার প্রস্তাব
গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, কী পেলাম কী পেলাম না সেই চিন্তা না করে নৌকার জন্য কাজ করতে হবে। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন-অর রশীদ দুর্দিনে যারা দলের সঙ্গে ছিলেন তাদের মূল্যায়নের দাবি করেন। তিনি পদ্মা সেতুর নাম শেখ হাসিনার নামে করার প্রস্তাব করেন। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন সিটি নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিএনপির অগ্নিসংযোগের ভিডিও চিত্রের দুটি সিডি প্রদান
বরিশাল বিভাগের পক্ষে ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, চট্টগ্রামের পক্ষে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির, সিলেটের পক্ষে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেসার উদ্দিন আহমেদও এ সময় বক্তব্য রাখেন। সভায় বিএনপি শাসনামলের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অগ্নিসংযোগসহ নানা অপকর্মের ওপর নির্মিত ভিডিও চিত্রের দুটি করে সিডি দেওয়া হয় নেতাদেরকে। পরে প্রধানমন্ত্রী এসব সিডি প্রত্যন্ত এলাকায় প্রচারের পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে নির্দেশ দেন।
আরো পড়ুন : আবারো লড়াইয়ে নামছেন খালেদার আইনজীবীরা
বাজেটের পর ইউপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক
বাজেট পাসের পর দলের ইউনিয়ন-পর্যায়ের নেতা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দল-সমর্থিত নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গণভবনে ডাকবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তারিখ পরে চূড়ান্ত হবে। গণভবনের স্বল্প পরিষদে সকলের স্থান সংকুলান হবে না বলেই গতকাল কেবল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি দলের জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে।