মতিনুজ্জামান মিটু : এডিবি বা অন্য কোন দাতার অর্থ এবং মতে নয়, নিজেদের টাকায় নিজেদের মতো করে দ্রুত প্রকল্পের বাস্তবায়ন চায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিএমইউ-আইএমআইপি-এমআইপি এর প্রকল্প পরিচালক এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম বলেন, ম্যানিলার এডিবি সদর দপ্তর চায় তাদের সহায়তার প্রকল্প তাদের মতো করে করাতে। আমাদের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ আমরা চাই নিজেদের টাকায় নিজেদের মতো করে দ্রুততম সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন। বর্তমানে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে, পদ্মা সেতুর মতো অনেক প্রকল্পই আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারি। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বা অন্য কোনো দাতার অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়নে অযথা সময় ক্ষেপন হয়। এডিবি বা উন্নয়ন সহযোগিদের যে কোনো একটি প্রকল্পের স্ট্যাডিতে পাঁচ বছর, বাস্তবায়নে পাঁচ বছর এবং মূল্যায়নে ছয় বছর লাগে। এতে প্রকল্পের খরচও বেড়ে যায়। এসব কারণে নিজেদের টাকাতেই করতে চাই উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাতাদের আরোপিত শর্তের প্রতিবন্ধকতায় বিগত বছরগুলোতে প্রকল্পে তাদের অর্থ সহায়তা কমেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)’র উন্নয়ন বাজেটের সিংহভাগই সরকারের নিজস্ব অর্থে নির্বাহ করা হচ্ছে। বাপাউবো সরকারের উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের সাহায্যে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও বিশ্বব্যাংক, ইফাদ, নেদারল্যান্ড সরকার, জাইকা ইত্যাদি সহযোগির কাছ থেকে পানি সম্পদ খাতে সহায়তা পাওয়া যায়। প্রকল্পে দাতাদের শর্ত সাপেক্ষে অর্থ সহায়তা প্রসঙ্গে সদ্য অবসরে যাওয়া বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এ কে এম মমতাজ উদ্দিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শুরু থেকেই দাতাদের এমন শর্ত থাকে। ওই শর্ত মেনেই বিভিন্ন প্রকল্পে দাতাদের ঋণ ও অনুদান সহায়তা নেয়া হয়।
তবে বর্তমানে দাতাদের ঋণ ও অনুদান সহায়তা অনেক কমেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রায় ৯০ ভাগ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব সম্পদে এবং বাকী ১০ ভাগ দাতা অর্থাৎ উন্নয়ন সহযোগিদের অর্থে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
এব্যাপারে বাপাউবো’র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহাদ হোসেন বলেন, সুদ ও শর্তের প্রতিবন্ধকতা এবং দেশের অর্থিক সক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন প্রকল্পে দাতাদের অর্থ সহায়তা নেয়ার প্রবণতা কমেছে। আগে উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তত ৫০ ভাগই বাস্তবায়ন হতো দাতাদের অর্থ সহায়তায়। এখন তা অনেক কমে গেছে। ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগিদের অর্থে চলমান সব প্রকল্পই শেষ হয়ে যাবে। বর্তমানে বিদেশিদের সহায়তার খুব কম প্রকল্পই অনুমোদনের অপেক্ষায় পাইপ লাইনে আছে।