কোটা সংস্কার করা প্রয়োজন। বর্তমান প্রেক্ষিতে একজন যোগ্যতম প্রার্থী ভাইবা দিতে গিয়ে সারাদিন বসে থেকে ভাইবাতে অনেক ভালো করেও চাকরীটা পাচ্ছে না। অপর পক্ষে তার থেকে অনেক কম যোগ্যতা সম্পর্ণ ব্যক্তি কোটা নিয়ে চাকরীটা পেয়ে যাচ্ছে। আবার কোটাধারী স্টুডেন্ট না পাওয়া গেলে তাদের জন্য জায়গাটা ফাকা রাখছে, কিন্তু যোগ্যতাসম্পর্ণ একটা ছেলেকে বেকার বানিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে এ কি অন্যায় নয়? ফলে একটি ভালো স্টুডেন্ট হতাশা নিয়ে বাড়ী ফিরছে। কি করবে সে? তার উপর যে নির্ভর করছে একটি পরিবার। এসব হতাশা নিয়ে শেষ পর্যন্ত অনেকে জীবনটাই হারিয়ে বসছে। ঠিক তখন সেই পরিবারটার কী অবস্থা হয়, একবার ভেবে দেখেছেন? আজ লক্ষ লক্ষ মেধাবী ছাত্রছাত্রী বেকার কেন? কি তাদের অপরাধ? তাদের কি যোগ্যতা থাকা সত্যেও চাকরী পাওয়ার অধিকার নেই?
যারা কোটা সংস্কারকে ধামাচাপা দিতে চান তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে চাই, কোটা আমরা কেন ব্যবহার করি? যেন তারা ভালো কিছু করতে পারে তাই তো? তবে তাদের তো সেই পরিমাণ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে বলি, মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মেয়েরা ভালো কিছু করুক, এটা আমরাও চাই। কিন্তু কথা হলো তাদের তো মেধাবী হতে হবে । সরকার একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কে সম্মানি ভাতা দেন কেন? তাড়া যেন চলতে পারে, ছেলে মেয়ে কে মানুষ করতে পারে। সব গুলা থার্ড ক্লাস সার্টিফিকেট নিয়ে কোটাধারীর চাকুরী করছে। একজন ফাস্টক্লাস পাওয়া স্টুডেন্ট বেকার হচ্ছে। আবার তাদের কোটায় আলাদা করে পদ রেখে দিচ্ছে কিন্তু কোটা পূরণ করার মতো স্টুডেন্ট পাচ্ছে না। কোটার পদগুলো ফাকা রাখছে, এটা কি অন্যায় নয়? আমাদের দেশ স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ভোলার মতো না। আমরা তাদের সম্মান শ্রদ্ধা করে যাচ্ছি।
এখন কথা হলো সরকার মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০% করেছে, সেই ৩০% ছাত্রছাত্রী তো পাওয়া যাচ্ছে না। কেন সেই ৩০% কোটার জন্য পদ ফাকা থাকবে? অপর দিকে মেধাবী বেকার বাড়বে? আবার আছে পোষ্য কোটা। যারা সরকারি চাকুরী করে ফ্যামিলি ভালোভাবে চালাচ্ছে, ছেলেমেয়েকে বিদেশে পড়াচ্ছেন কিন্তু দেশে তাদের জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আছে পোষ্য কোটা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কোটা প্রথা তুলে দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাই। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন তাই বলে কোটি কোটি মানুষের ক্ষতি করে নয়। তাই আমার দাবী কোটা নিয়ে নয়, নিজ যোগ্যতায় চাকরী চাই। কোটা সংস্কার করা হোক ।
পরিচিতি : ছাত্র, কমার্শিয়াল কলেজ, রংপুর/ মতামত গ্রহণ : নৌশিন আহম্মেদ মনিরা/সম্পাদনা : মো. এনামুল হক এনা