শিমুল রহমান : সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একুশ মিশে গেছে এ দেশের মানুষের আবেগ, অনুভূতি আর শিহরণে। পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পেরোলেই ফুলে ফুলে ভরে যাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। তারপরই একুশের প্রথম প্রহর থেকে শুরু হবে ভাষা শহীদদের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন। দেশজুড়ে পালিত হবে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে প্রস্তুত। দিনটি পালন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিবছরের মতো এ বছরও আলপনা, দেয়াল লিখন আর তোরণে সাজানো হচ্ছে শহীদ মিনার এবং এর আশেপাশের এলাকা। এসব সাজসজ্জার মধ্য দিয়ে একুশের চেতনাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতেই প্রতিবছরের এ আয়োজন। একটু একটু করে শহীদ মিনারের লাল বেদি রঙিন হয়ে উঠছে আলপনার বর্ণিল রঙে। বেদির আলপনা আর দেয়াল লিখন শেষে দোয়েল চত্বর থেকে পলাশীর মোড় পর্যন্ত রাস্তায় আঁকা হবে আলপনা।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনারে শেষ সময়ের ঝাড়ু, ধোয়া-মোছা ও রংয়ের কাজ হচ্ছে। শহীদ মিনার এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে র্যাব ও পুলিশের একাধিক ওয়াচ টাওয়ার। পুরো এলাকায় টহল দিচ্ছে র্যাব ও পুলিশ। অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিজস্ব পোশাক ছাড়াও সাদা পোশাকে নজরদারি করছেন। সোমবার দুপুরে র্যাবের ডগ স্কোয়াড দিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় তল্লাশি চালানোও হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, যাদের বিনিময়ে আমরা আজ বাংলা ভাষা এবং লাল সূর্য পেয়েছি, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমরা এটা নিয়ে যেতে চাই। যেন তারা এটাকে হৃদয়ে ধারণ করতে পারে। চারুশিল্পীরা কেউ দেখেনি গৌরবের সেই ভাষা আন্দোলন, তারপরও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একুশের আয়োজনের অংশ হতে পেরে গর্বিত নতুন প্রজন্মেরা।
একুশ মানে ভাষা শহীদদের হারানোর শোক, একই সাথে একুশ মানে মাতৃভাষাকে অর্জনের গৌরব। এই শোক আর প্রাপ্তির গৌরবকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, মন্ত্রী পরিষদ, তিন বাহিনীর প্রধান ও পুলিশ প্রধানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং বিভিন্ন সংগঠন।