মতিনুজ্জামান মিটু : চলতি বছরে দেশে উৎপাদন হতে পারে ৬ হাজার মেট্রিক টন মধু। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মৌচাষ উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি খন্দকার আলিমুজ্জামান বলেন, দেশে মধু উৎপাদন হয়েছিল ২০১৫ সালে ১৬০০ মেট্রিক টন, ২০১৬ সালে সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন ও ২০১৭ সালে ৫ হাজার মেট্রিক টন। চলতি ২০১৮ সালে ৬ হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগ, মৌচাষির সংখ্যা আরও বাড়ানোসহ সব সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশে এক লাখ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চাষি পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন প্রকল্পের শস্য উৎপাদন বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ মো. রাজু আহমেদ বলেন, দেশে মধুর সঙ্গে সঙ্গে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিরও লোভনীয় সুযোগ রয়েছে। ফসলের জমিতে মৌ চাষ বাক্স বসিয়ে সহজেই এই সুযোগকে কাজে লাগানো যায়। বিজ্ঞানীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ফসলের মাঠে মৌমাছির বিচরণ ফুলের বাড়তি পরাগায়নে কৃষিজ, ফলদ ও বনজ গাছ-পালার ফলন ও গুণগতমান বৃদ্ধিসহ জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এতে ফসলের ফলন ১৫ থেকে ২০ ভাগ বেড়ে থাকে। অধিকাংশ কৃষকের এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই। এক সময় কৃষকরা মনে করত মৌমাছি খেতে বিচরণ করে ফসলের রস খেয়ে ফলন কমিয়ে দেয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণসহ নানা কর্মকান্ডে ফসলের মাঠের কৃষকের এ ধারণা বর্তমানে বদলে গেছে। কৃষকরা এখন বুঝেছে ফসলের মাঠে মৌচাষ করলে ফলন কমেনা বরং অনেকগুণ বেড়ে যায়। এতে জমির মালিক ও মৌচাষি উভয়ই লাভবান হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমির সরিষা, কালিজিরা, ধনিয়া ও তিল এবং লিচু গাছ থেকে মধু আহরণ করা হচ্ছে। শরিয়তপুরের ভেদেরগঞ্জ ও জাজিরাসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্তমানে ধনিয়া ও কালোজিরা থেকে প্রচুর পরিমাণ মধু আহরণ করা হচ্ছে।