নুরুল আমিন হাসান : মাদক ব্যবসার আধিপত্যের জের ধরেই কয়েকবার চেষ্টা চালানো পর কুপিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীতে আক্তার হোসেন (৩৫) ও আসিবুর রহমান মিম (২৭) নামের দুই ভাইকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেফতারকৃত হুমায়ুন কবির।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে টঙ্গী থানার দত্তপাড়ার ইশানাদি সরকার রোডের নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলায় আক্তার ও তার চাচাতো ভাই আসিবুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ঘাতক আসামিরা। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে ১৪ ডিসেম্বর টঙ্গী থানায় ১৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নম্বর-৩৮।
হত্যাকা-ের ঘটনায় র্যাব-১ এর সদস্যরা বুধবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টঙ্গীর দত্তপাড়া ধুমকেতু স্কুলের সামনে থেকে হত্যা মামলার হুমায়ুন কবির (২৪), জুয়েল শিকদার (১৯), জীবন (২৯), বিল্লাল হোসেন (১৮) ও রবিউল রবু (১৮) নামের পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত হতে দু'টি বিদেশি পিস্তল, দু'টি ম্যাগজিন, ৭ রাউন্ড গুলি, একটি চাপাতি, একটি ছুরি ২৪৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বিগত ৫ বছর ধরে গ্রেফতারকৃত হুমায়ুনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র টঙ্গীর এরশাদ নগর ও দত্তপাড়ায় মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলো। হুমায়ুনের এই গ্রুপটি দত্তপাড়ায় দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী গ্রুপে পরিচিত। তারা মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে ছিনতাই-রাহাজানিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, এলাকার বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানা গেছে, নিহত আসিবুর-আক্তার সম্প্রতি মাদক ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করেন। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। এর আগে আক্তার সাত বছর ধরে দুবাই ছিলেন। দুবাই থেকে গত দুই বছর আগে দেশে ফিরে এসে একটি ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করেন। হত্যার দুই মাস আগে ওই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। অন্যদিকে, আসিবুর চার বছর ইতালিতে ছিলেন, তিনি দেশে গত ৮/৯ মাস আগে দেশে ফিরে আসেন।
পরিচালক বলেন, তারা দু’জনই দ্রুত বিত্তশালী হতেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ফলে তারা দ্রুত এলাকায় মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এতেই এলাকার হুমায়ুন গ্রুপ ও মিম গ্রুপের বিরোধ সৃষ্টি হয়। একপর্যায় হুমায়ুন তাদের হত্যার পরিকল্পনা করেন।
গ্রেফতারকৃত হুমায়ুন ও বিল্লাল টঙ্গীর স¤্রাট হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক ও ছিনতাই মামলাও রয়েছে বলে জানান র্যাবের ওই কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :