হুমায়ুন কবির খোকন: বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলা ভাষী অঞ্চলের লেখক-শিল্পীদের নিয়ে ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী সর্ববঙ্গীয় লেখক-শিল্পী সম্মেলন।
বাংলার কথাসাহিত্য, অনুবাদ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সমকালীন সাহিত্য, এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিতে প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে এই সম্মেলনে আলোচনা করবেন দুই দেশের লেখক ও শিল্পীরা। বুধবার সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় লেখক-শিল্পী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সর্ববঙ্গীয় লেখক-শিল্পী সম্মেলনের সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অংশ নেন বাংলাদেশের কবি আজিজুর রহমান, ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক ঋত্বিক ব্যানার্জি, পশ্চিমবঙ্গের নাট্যনির্দেশক শৈবাল কুমার ঘোষস,কবি অসিত গোস¦ামীসগ বেশকজন কবি, কথাসাহিত্যিক। বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষাভাষী দুটি দেশের বন্ধন একসূত্রে গেঁথেছে আমাদের মৃত্তিকালগ্ন সংস্কৃতি। সেই সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমেই আমাদের মানবিক জীবনবোধের একটি সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে উগ্রবাদ রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মঞ্চের সংস্কৃতিকর্মীরা প্রায় বলেন, নিজের খেয়ে আমরা বনের মোষ তাড়াই। নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে তারা সংস্কৃতিচর্চা করছেন। এখন সেই বনের মোষ তাড়াতে না পারলে তা বাংলাদেশ নামের সাজানো ফুলের বাগানটি একদিন তছনছ করে দিয়ে যাবে। সেলিনা হোসেন বলেন, পারস্পরিক মৈত্রী, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির মিলন সেতু বন্ধনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্মেলন। বাংলাভাষী লেখক-শিল্পীদের একটি বৃহৎ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার পাশাপাশি অভিন্ন যোগাযোগ ও মতবিনিময়ের স্থান হিসেবে বিবেচিত হবে এই সম্মেলন।
উদ্বোধনী আসরে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নটরাজ ও ভারত থেকে আসা একটি দল। গৌড়ীয় নৃত্য পরিবেশন করেন র্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিস। বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম জানান, উদ্বোধনী আসরের পর জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে হয় ‘কথা সাহিত্য’ এবং ‘রবীন্দ্র সাহিত্যে বিশ্বায়ন’ শিরোনামের দুটি সেমিনার। একই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে কবিতা পাঠ ও আবৃত্তির আসর। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুরাগ থিয়েটার মঞ্চস্থ করে ‘গ্রাস’ নাটকটি।
দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে রয়েছে ‘অনুবাদ-সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ ও সমকালীন সাহিত্য’ নিয়ে সেমিনার। তৃতীয় দিন জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন ও শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে আবৃত্তি ও প্রবন্ধ পাঠ, শিশু একাডেমিতে বিকাল ৩টায় রয়েছে শিশু সাহিত্য বিষয়ক সেমিনার।
এছাড়া প্রতিদিন উৎসব প্রাঙ্গণে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রখ্যাত শিল্পীরা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করবে।