সজিব খান: ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন করবো। এই শীতে মরে যাবো তবুও রাজপথ ছাড়বো না।’ কথাগুলো আমির হোসেন নামে একজন ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকের যিনি প্রেসক্লাবের সামনে অামরণ অনশনরত শিক্ষকদের সঙ্গে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে অনশন করছেন।
তিনি বলেন, আমরা বেতন ভাতা না পেয়ে অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছি।এই চাকরি করে জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। তাই বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ে মাঠে নেমেছি।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তীব্র শীতের মধ্যে চতুর্থ দিনের মতো কম্বল মুড়ি দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা। দাবি একটাই চাকরি জাতীয়করণ।
এদিকে টানা চারদিনের অনশনে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে কারও কারও শরীরে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
কর্মসূচির আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী রুহুল আমিন বলেন, ১৯৯৪ সালে জারি হওয়া একটি পরিপত্রে রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ৫শ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারগুলোর আমলে ধাপে ধাপে বেতন বাড়তে থাকে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো বেতন বাড়েনি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি বর্তমান মহাজোট সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল জাতীয়করণ করে। ইবতেদায়ি মাদ্রাসাতেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সরকারি একই সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রাথমিকের শিক্ষকেরা অনেক টাকা বেতন পান। অথচ ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ২ হাজার ৫শ’ টাকা, সহকারী শিক্ষক ২ হাজার ৩শ’ টাকা ভাতা পান। এটা অমানবিক ও শিক্ষকদের অবমাননা।
জাতীয়করণের দাবিতে গত ১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট পালন করার পর ৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষকরা। এ কর্মসূচিতে শত শত ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক যোগ দেন।
সূত্র্র: বাংলা নিউজ