শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৫ সকাল
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চালের বাজারে প্রধান নিয়ন্ত্রক মিলাররা

ডেস্ক রিপোর্ট : কৃষক, সরকার ও মিলার-তিনটি পর্যায়েই মূলত দীর্ঘমেয়াদে চাল মজুদ করা হয় দেশে। পাশাপাশি মৌসুমি ও পাইকারি ব্যবসায়ীরাও স্বল্প সময়ের জন্য খাদ্যশস্যটি মজুদ করে থাকেন। তবে অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে চাল মজুদে শীর্ষে রয়েছেন মিলাররা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক গবেষণা বলছে, প্রায় ৯৭ লাখ টন মজুদ সক্ষমতা নিয়ে মিল মালিকরাই এখন চালের বাজারে প্রধান নিয়ন্ত্রক।

দেশে কৃষক পর্যায়ে উৎপাদিত চালের কতটুকু তারা ভোগ করে, নিজস্ব প্রয়োজন মিটিয়ে কতটুকুই বা বিপণন করে ও মজুদের পরিমাণ কত-এসব জানতে প্রথমবারের মতো মাঠপর্যায়ে এ গবেষণা পরিচালনা করেছে বিবিএস। দেশের ৬৪টি জেলার ১২০ মৌজায় গবেষণাটি চালানো হয়েছে। প্রায় আট হাজার পরিবারের ২০১৬ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে এতে।

‘অ্যানালিটিক্যাল রিপোর্ট অন মেথডোলজিস অব দ্য ক্রপ এস্টিমেশন অ্যান্ড ফোরকাস্ট সার্ভে অ্যান্ড প্রাইভেট স্টক অব ফুড গ্রেইন সার্ভে ২০১৬-১৭’ শিরোনামে চলতি বছর ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিএস।

চালকলগুলোকে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি থেকে বড়-এ তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে তাদের সক্ষমতাকে পরিমাপ করা হয়েছে গবেষণায়। এতে দেখা গেছে, ক্ষুদ্র চালকলগুলোর মজুদক্ষমতা ২৮ লাখ ৫৭ হাজার ১৭০ টন, ছোট চালকলগুলোর ৩৭ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫১ ও মাঝারি থেকে বড় চালকলগুলোর ধারণক্ষমতা ৩০ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৫ টন। এ তিনটি ক্যাটাগরির চালকলে সব মিলিয়ে ৯৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৬ টন চাল মজুদ করা সম্ভব। এ সক্ষমতার বিপরীতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৪ লাখ ১৫ হাজার টন চাল মজুদ করে চালকলগুলো।

অন্যদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন খাদ্যগুদামে প্রায় ২২ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ রাখা সম্ভব। এসব গুদামে চালের পাশাপাশি অন্যান্য খাদ্যশস্য ও বীজ রাখা হয়। আর কৃষক পর্যায়ে মোট চাল উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ মজুদ রাখা হয়; গত অর্থবছরের উৎপাদন হিসাবে নিলে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২ লাখ টন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মজুদ সক্ষমতা যত বাড়বে, চালের বাজারের নিয়ন্ত্রণ ততই মিলারদের হাতে আরো কুক্ষিগত হবে। তাই চালের বাজারে ভারসাম্য আনা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এরই মধ্যে চালের বাজারের পুরো নিয়ন্ত্রণ মিলাররা নিয়ে নিয়েছেন। এক দশক ধরেই দেশের অটো রাইস মিলগুলোর উৎপাদন ও মজুদক্ষমতা অনেক বেড়েছে। মিলারদের মজুদ সক্ষমতা যত বেড়েছে, ততই চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে।

তিনি বলেন, ধান উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো অংশগ্রহণ না থাকলেও চাল উৎপাদন ঠিক রাখতে প্রচুর ধান মজুদ করছে অটো রাইস মিলগুলো। এছাড়া ধান থেকে চাল করার পর অতিরিক্ত মুনাফার আশায় তাও মজুদ রাখছে তারা। ফলে বাজারে দাম ওঠানামা করানোর ক্ষেত্রে এক ধরনের সুযোগ নিচ্ছেন মিল মালিকরা। এ অবস্থায় চালের বাজারে ভারসাম্য আনার জন্য পরিকল্পনা নিতে হবে।

চালকলে ধান ও চালের মজুদ কী পরিমাণ ও কতদিন রাখা যাবে, সে বিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, চালকলে ১৫ দিনের উৎপাদন সক্ষমতার পাঁচ গুণ ধান ও দ্বিগুণ চাল মজুদ রাখা যাবে। এর চেয়ে বেশি মজুদ রাখলে তা হবে বেআইনি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা না মেনে চাল মজুদ করেন মিলাররা। এর মধ্য দিয়ে তারা চালের বাজারে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী (মোহন) বলেন, চালের বাজারে আমরা মোটেও নিয়ন্ত্রক নই। আমরা সরকারের ও কৃষকের সহায়ক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা নিজেরা শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গেই কাজ করছি। আমাদের কোনো মিলে আইনবহির্ভূতভাবে এক চুল পরিমাণ বাড়তি মজুদ পাওয়া যায়নি কিংবা যাবেও না।

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চুক্তিযোগ্য চালকলের সংখ্যা ২২ হাজার ৬৫৪। বিবিএসের গবেষণায় এসব চালকলকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। তিন ধরনের চালকলের মাধ্যমে প্রতি বছর ২ কোটি ৭৯ লাখ ২৬ হাজার টন চাল উৎপাদন করা হচ্ছে। এ পরিমাণ চাল উৎপাদনে প্রায় ৪ কোটি ৪৬ লাখ টন ধান ভাঙানো হচ্ছে। অর্থাত্ দেশের সিংহভাগ ধান এখন চালকলগুলোতেই ভাঙানো হচ্ছে। ফলে চাল মজুদের বড় অংশই থাকছে এসব চালকলে।

সূত্র : বণিক বার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়