শিরোনাম
◈ আ. লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা কাকে ভোট দিবেন, নানা অলোচনা ◈ উগান্ডাকে হারিয়ে নারী কাবা‌ডি বিশ্বকা‌পের সেমিফাইনালে ভারত ◈ পরিচয় জানা গেল পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত ৩ জনের  ◈ মৃত্যুদণ্ড, নিষেধাজ্ঞা ও পলাতক নেতৃত্ব, নেই অনুশোচনাও—কোন পথে ফিরবে আওয়ামী লীগ? ◈ ঢাকার পুরোনো ভবনগুলোর ৯০ ভাগই বিল্ডিং কোড মানে নাই: রিজওয়ানা হাসান ◈ নরসিংদী কেন ভূমিকম্পের কেন্দ্র? ◈ ১০০ বছর বড় কম্পন নেই—আজকের ভূমিকম্প বড় বিপদের ইঙ্গিত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা ◈ বাংলাদেশ ম্যাচের আগে জার্মানিকে উড়িয়ে দিলো থাইল্যান্ড  ◈ আয়ারল‌্যান্ডের বিরু‌দ্ধে বিশাল লিড নেওয়ার পথে বাংলাদেশ  ◈ ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন স্থগিত করলেন বিচারক

প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৫ দুপুর
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:৩৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভূমিকম্পে বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকিতে!

বিবিসি বাংলা: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৫ দশমিক ৭ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহওয়া অধিদপ্তর।  

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ড থেকে কম্পন শুরু হয়।

আজ সারা দেশে যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, এর উৎপত্তিস্থল তিব্বতের শিগেৎসে শহরে। সেখান থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৬১৮ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এর আগেও বাংলাদেশে গত তেসরা জানুয়ারি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। তবে সেটি ছিল মাঝারি মাত্রার, আজকের মতো এতটা তীব্র ছিল না। চলতি বছরের শুরুতেই হওয়া ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও ছিল বাংলাদেশের বাইরে।

রিখটার স্কেলে পাঁচ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের হোমালিন এলাকায়, ঢাকার সাথে যার দূরত্ব ৪৮২ কিলোমিটার। কয়েকশো কিলোমিটার দূরের দেশে হওয়া পরপর দু’টি ভূমিকম্প বাংলাদেশে বসে এতটা জোরালভাবে অনুভব করতে পারাটা কি কোনো চিন্তার কারণ?

জানতে চাওয়া হয়েছিল আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানার কাছে।

এই দু’টোর কোনোটাতেই বাংলাদেশে কোনো প্রভাব পড়েনি। ঝাঁকুনি অনুভব করেছে কেবল। তবে আজকের মাত্রা যদি আরও বেশি হতো, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়তে পারতো। স্থায়িত্ব বা ম্যাগনিটিউড আরও বেশি হলে ঝাঁকুনি আরও বেশি হতে পারতো। ভবনে ফাটল ধরতে পারতো, বলেন তিনি।

বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা—এ তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান এবং বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে বড় বড় ফল্ট আছে।

মূলত, পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ট আলাদা আলাদা বিট বা প্লেট টেকটোনিক দিয়ে তৈরি হয়েছে যা নিচের নরম পদার্থের ওপরে ভাসছে। সারা পৃথিবীতে এরকম বড় সাতটি প্লেট এবং অসংখ্য ছোট ছোট সাব-প্লেট রয়েছে। এগুলো যখন সরে যায় বা নড়াচড়া করতে থাকে বা একটি অন্যদিকে ধাক্কা দিতে থাকে, তখন ভূ-তত্ত্বের মাঝে ইলাস্টিক এনার্জি শক্তি সঞ্চিত হতে থাকে।

সেটা যখন শিলার ধারণ ক্ষমতার পেরিয়ে যায়, তখন সেই শক্তি কোনো বিদ্যমান বা নতুন ফাটল দিয়ে বেরিয়ে আসে। তখন ভূ-পৃষ্টে কম্পন তৈরি হয়, সেটাই হচ্ছে ভূমিকম্প।

যেসব স্থানে একটি প্লেট এসে আরেকটি প্লেটের কাছাকাছি মিশেছে বা ধাক্কা দিচ্ছে বা ফাটলের তৈরি হয়েছে, সেটাকে বলা হয় ফল্ট লাইন।

বাংলাদেশ অঞ্চলে ভূমিকম্পের অন্যতম উৎস হলো ডাউকি ফল্ট, যেটি শেরপুর থেকে শুরু জাফলং হয়ে ভারতের করিমগঞ্জ থেকে বিস্তৃত।

‘এসব কারণে বাংলাদেশ খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ। তাই ভূমিকম্প অনুভব করার জন্য যে নিজের দেশেই উৎপত্তি হতে হবে, এমন না। এর প্রমাণ তো এবার পাওয়াই গেল। ৬১৮ কিলোমিটার দূরের ভূমিকম্পে বাংলাদেশে ভালোই ঝাঁকুনি খেয়েছে। মিয়ানমারের পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পও ঢাকার মানুষ টের পাচ্ছে। ওইসব এলাকার বড় ভূমিকম্প আমাদের জন্য হুমকির,’ বলছিলেন আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা।

তার মতে, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, চীন, ভারত, নেপালের অবস্থান ওই তিন ফল্ট লাইনের আশেপাশে।

‘তাই, মিয়ানমারের পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প আমরা অনুভব করি। আর যদি সেখানে সাত মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তখন আমাদের ওপর সেই প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে। আর ভারত বা নেপালে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ওই সম্ভাবনা আরও বেশি।’

যদিও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাখাওয়াত হোসেনের মতে, ‘আমাদের দেশ জাপানের মতো ভূমিকম্পপ্রবণ না। আমরা মডারেটলি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ।’

‘কিন্তু সেই অনুযায়ী আমাদের তো প্রস্তুতি নাই। আমাদের বিল্ডিং কোড মানা হয় না।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়