বরুন বাড়ৈ, আগৈলঝাড়া: [২] বাবার কাছ থেকে আনা পড়াশোনার জন্য খরচের টাকা থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে প্রথমে হাত বানানোর কাজ শুরু করি। বিষয়টি আমার বাবা জানতে পারেন। তিনি আমাকে উৎসাহিত করেন। আমার সঞ্চয় ও বাবার দেয়া টাকা দিয়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় সারাদেশসহ সারাবিশ্বে অনেক লোক তাদের হাত হারাচ্ছেন। তাদের কথা চিন্তা করে এই রোবটিক আর্ম মানবকল্যাণের জন্য তৈরি করি। কথাগুলো বলেন বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের প্রীতম পাল।
[৩] প্রীতম উপজেলার শিহিপাশা গ্রামের বাসিন্দা ও রাজিহার ইউনিয়ন পরিষদ সচিব গৌতম পাল ও গৃহিনী কাজলী পালের ছেলে। সে গৈলা মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র। বর্তমানে সে বরিশাল নগরীর অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত।
[৪] দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে হাত হারানো ধনাঢ্য ব্যক্তিরা বিদেশ থেকে ৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ব্যায়ে কৃত্রিম হাত আমদানি করে তার সংযোজন করছেন। তবে ক্ষুদে বিজ্ঞানী প্রীতমের উদ্ভাবিত কৃত্রিম হাত তৈরিতে খরচ হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার টাকা। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়ন তথা মানবদেহে কৃত্রিম হাত সংযোজনের মাধ্যমে একজন মানুষকে স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার জন্য রোবটিক আর্মের যুগোপযোগী উন্নয়ন ও সাশ্রয়ী মূল্যে বাজারজাত করণে আগ্রহী প্রীতম। এ উদ্ভাবন নিয়ে আরও কাজ করতে প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।
[৫] ক্ষুদে বিজ্ঞানী প্রীতম পাল বলেন, বিভিন্ন দুর্ঘটনায় সারাদেশসহ সারাবিশ্বে অসংখ্য লোক তাদের হাত হারাচ্ছেন। বেঁচে থাকার জন্য তাদের বাকিটা জীবন কর্মহীন হয়ে থাকতে হয়। পাশাপাশি অন্যের ওপর নির্ভর করেও তাদের সব কাজ করতে হচ্ছে। এমন সব মানুষের জন্যই আমি আবিষ্কার করেছি রোবটিক আর্ম বা কৃত্রিম হাত মানবদেহে সংযোজন করা যেতে পারে। মানবদেহে কৃত্রিম হাত সংযোজন করলে যেখানে মানুষের হাত পৌঁছানো সম্ভব নয়, তেমন কঠিন যান্ত্রিক স্থানেও কৃত্রিম হাত অনায়াসে কাজ করতে পারবে। স্বাভাবিকভাবেই এই হাত দুই থেকে ছয় কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করতে সক্ষম। হেভিওয়েট হাত হিসেবে এর স্থায়িত্বও অনেক বেশি।
[৬] প্রীতমের বাবা ইউপি সচিব গৌতম পাল জানান, তার ছেলের উদ্ভাবন নিয়ে তিনি আনন্দিত। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পড়াশুনার পাশাপাশি আমার ছেলে প্রীতম তার উদ্ভাবনীতে আরও সাফল্য পাবে বলে আমি আশা করি।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :