মুসবা তিন্নি : [২] জঙ্গলের মধ্যে রহস্যে ঘেরা ছোট্ট একটা গ্রাম। আদি অনন্তকাল ধওে যেখানকার বাসিন্দারা চোখে দেখতে পান না। জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই দৃষ্টিশক্তি হারায় শিশুরা। শুধু মানুষই নয়, একই হাল গবাদি পশু থেকে শুরু করে ছোট বড় পাখিরও!
[৩] রহস্যে মোড়া এই গ্রামের নাম 'টিলটেপেক'। উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর জঙ্গলে রয়েছে তার অস্তিত্ব। স্থানীয় খবরের কাগজওয়ালারা অবশ্যে এর নাম দিয়েছেন অন্ধদের গ্রাম।
সূত্র : নিউজ ১৮
[৪] মেক্সিকোর জঙ্গলের এই 'টিলটেপেক' গ্রামের বাসিন্দারাও ভারী অদ্ভুত। ছোট্ট এই গ্রামের বাসিন্দারা 'জাপোটেক' প্রজাতির মানুষ। আদিবাসী এই প্রজাতির ৩০০-ও বেশি পরিবার এখনও অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে ওই গ্রামে।
[৫] বর্তমানে 'টিলটেপেক'-এ রয়েছে 'জাপোটেক'- দের অন্তত ৭০টি কুঁড়ে ঘর। তাদের বাড়িগুলিতে থাকে না কোনও দরজা-জানালা। মূলত বাজরা, শিম আর লঙ্কা খেয়েই জীবন ধারন করে তারা। এছাড়া উৎসবের দিনগুলিতে চলে মদ্যপান। তখন মত্ত অবস্থায় আগুনের চারপাশে নাচে তারা।
[৬] 'জাপোটেকরা' বিশ্বাস কওে তাদের অন্ধত্বের পিছনে রয়েছে 'লাভজুয়লো' নামের একটি গাছ। যার অভিশাপে গ্রামের সকলেই দৃষ্টিশক্তি হারান। সম্প্রতি এই নিয়ে গবেষণা শুরু করে বিজ্ঞানীদের একটি দল। তবে 'লাভজুয়লো' গাছের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি তারা।
[৭] বিজ্ঞানীদের দাবি, এর পিছনে রয়েছে 'ব্ল্যাক ফ্লাই' নামে বিষাক্ত এক মাছি। মেক্সিকোর জঙ্গলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে 'ব্ল্যাক ফ্লাই'। 'টিলটেপেক' গ্রামেও বিষাক্ত মাছিটির অস্তিত্ব দেখতে পেয়েছেন তারা।
[৮] গবেষকদের দাবি, মাঝে মধ্যেই ব্ল্যাক ফ্লাইয়ের কামড় খেতে হয় 'জাপোটেক' বাসিন্দাদের। ফলে মাছির বিষ ছড়িয়ে পরে তাদের শরীরে। এই বিষ চোখের স্নায়ুর উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বিষের কারণেই ছিঁড়ে যায় চোখের স্নায়ু। আর সেটাই 'জাপোটেক' দের অন্ধত্বের মূল কারণ। যদিও সরকারিভাবে এই তত্ত্বে এখনও কোনও সিলমোহর দেয়া হয়নি।
[৯] আদিম এই জনজাতিকে বাঁচাতে কয়েক বছর আগে অনেক চেষ্টা চালিয়েছিলো মেক্সিকো প্রশাসন। 'জাপোটেক'- দের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়াও হয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্য জায়গায় গিয়ে মৃত্যু হতে থাকে জঙ্গলের আদি এই বাসিন্দাদের। ফলে পূনরায় 'টিলটেপেক' গ্রামেই ফিরে যান তারা। সম্পাদনা: রাশিদ
এমটি/আর/এইচএ