স্পোর্টস ডেস্ক : এশিয়া কাপের সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কে সাজিয়েছেন এমন একাদশ? মিডল অর্ডার ছাড়া কার মাথা থেকে এসেছে গোটা ব্যাটিং লাইন আপের আদল? পাকিস্তানের মতন বড় প্রতিপক্ষের কাছে হারতেই পারে।
তবে ম্যাচ হারা নয় কেবল হারের ধরন, খেলার ধরণ, একাদশ, ব্যাটিং লাইন-আপ নিয়ে উঠেছে অনেক প্রশ্ন। নাগালে থাকা একটা ম্যাচ এমন অদ্ভুতুড়ে পরিকল্পনায় কেন খেলল টিম ম্যানেজমেন্ট সেই জবাব মিলছে না।
ম্যাচ হেরে বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে লিটন দাসের না থাকার কারণ বলতে চাইলেন। লিটন যে খেলার মতন অবস্থায় নেই বাইরের কেউ না বুঝলেও দুদিন ধরে তারা তো জানতেন। লিটন নেই মানে টপ অর্ডারে একটা জায়গা ফাঁকা, সেখানে তারা আরেকজন টপ অর্ডার (তানজিদ হাসান) ব্যাটারকে বসিয়ে একাদশে নেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানকে।
বাংলাদেশ মূলত খেলেছে তিনজন টপ অর্ডার আর বাকি সব লোয়ার অর্ডার ব্যাটার নিয়ে। দুই ওপেনারের পর তাওহিদ হৃদয় নেমেছেন তিনে, যিনি মূলত চারে সামলান মিডল অর্ডারের দায়িত্ব। হৃদয় উপরে উঠে যাওয়ায় চারে পাঠিয়ে দেয়া হয় শেখ মেহেদী হাসানকে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যার ব্যাটিং গড় -১১.৬৯!
সিমন্স এর কারণ হিসেবে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেটা আরও বিস্ময়কর। পেস বোলারদের আক্রমণ করতেই নাকি পাঠানো হয় তাকে। অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটে পেস বলের বিপক্ষেই বেশি দুর্বল দেখা যায় মেহেদীকে।
২৯ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর শেখ মেহেদীর সঙ্গে পাঁচে পাঠানো হয় সোহানকে। মেহেদী ও সোহান দুজনেই মূলত লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটার, খেলে থাকেন স্লগ ওভারে। পাওয়ার প্লের ভেতর নেমে তারা যেন পড়েন অকূল সাগরে। হাঁসফাঁস করতে করতে তারা এমন সব দৃশ্যের জন্ম দেন যা নিয়ে তৈরি হয় হাস্যরসের। এক ভারতীয় সাংবাদিক বলছিলেন, 'এরা আপনাদের চার-পাঁচের ব্যাটার। মনে হচ্ছে টেল এন্ডার।'
সিমন্স জানান এভাবেই নাকি তারা শ্রীলঙ্কার ১৭০ রান তাড়া করে জিতেছিলেন। কিন্তু সেদিন মূলত দুই ওপেনার ছাড়াও তিনে লিটন ছিলেন, তিনি পাওয়ার প্লেতে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। হৃদয় খেলেছিলেন চারে।
মিডল অর্ডারের ঘাটতি সামাল দিতে জাকের আলি অনিক আগে নামতে পারতেন। মিডল অর্ডারে বাকিদের চেয়ে তার খেলার অভিজ্ঞতা বেশি। তিনি নিজেকে ঠেলে দেন আরও নিচে, এবং নিচের কাজটাও করতে পারেননি। গোটা আসরে ৬৬ বল খেলে জাকের মারতে পারেননি কোন ছক্কা।
উইকেট এদিন একটু ট্রিকি ঘরানার ছিলো। ব্যবহৃত উইকেট হলেও ১৫০ রানের নিচের মনে হচ্ছিলো না। এমনকি পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আঘাও স্বীকার করেন তারা ১৫ রান কম করেছিলেন। বোলিং নিয়ে তাই অভিযোগ তোলার জায়গা কম। ১৩৬ রানের লক্ষ্যে নেমে রান তাড়ার ছকটাই মাথায় ছিলো না বাংলাদেশ দলের। তারা বাউন্ডারি মারার বল না পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে উদ্ভট সব শটের চেষ্টা করেছে। সোজা ব্যাটে খেলার চেষ্টাও দেখা যায়নি।
এশিয়া কাপের আগে পাওয়ার হিটিং নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। সেই কাজ করতে গিয়ে সিঙ্গেল নেওয়ার অভ্যাস কি মরে গেল কিনা এখন এটাও একটা প্রশ্ন।
ধীরে-সুস্থে খেলে ১৩৬ রান তাড়া করার বিশ্বাসই যেন ছিলো না গোটা দলের। শুরু থেকে তারা স্নায়ুচাপেই হয়ে গেছেন। এমন আবহ, এমন বড় মঞ্চে মেলে ধরার মানসিক সামর্থ্যই যেন ছিলো না তাদের। সূত্র, ডেইলি স্টার বাংলা