লন্ডনের ওভালে শেষ টেস্টর শেস দিনের সকালের মেঘলা আবহে রুদ্ধশ্বাস নাটকের পর মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে মাত্র ৬ রানে হারিয়ে সমতায় সিরিজ শেষ করল ভারত। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির পাঁচ ম্যাচ সিরিজ এখন ২-২ ব্যবধানে দাঁড়িয়ে, সিরিজের ভাগ্য নির্ধারিত হবে শেষ টেস্টে।
শেষ দিনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩৫ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। কিন্তু চোটে জর্জরিত ক্রিস ওকসের ব্যাটিং সামর্থ্য ছিল সীমিত, ডান হাতে স্লিং। এই পরিস্থিতিতে পুরনো বল হাতে নিয়ে সিরাজ দেখালেন অসাধারণ সুইং, কখনো দুই ডিগ্রি পর্যন্ত বল ঘুরিয়ে ইংল্যান্ডের প্রতিরোধে কফিনের শেষ পেরেকটি ঠুকে দিলেন।
চতুর্থ দিনে হ্যারি ব্রুক (১১১) ও জো রুট (১০৫)-এর দুর্দান্ত শতকে ভর করে ইংল্যান্ড প্রায় নিশ্চিত জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল। চা-বিরতির পরের হালকা বৃষ্টির জন্য খেলা গড়ায় পঞ্চম দিনে। সেখান থেকেই শুরু ভারতীয় পেসারদের শেষ ধাক্কা।
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের প্রথম ওভারে জেমি ওভারটন দুটি চার হাঁকিয়ে আশা জাগালেও সিরাজ অন্য প্রান্ত থেকে ম্যাচের চিত্রনাট্য বদলে দেন। জেমি স্মিথকে দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পেছনে ক্যাচ করিয়ে শুরুটা করেন। এরপর ওভারটনকে এলবিডব্লিউ করে দেন, যদিও ‘আউট’ হতে হয় রিভিউর পর ‘অ্যাম্পায়ারস কল’-এ।
এরপর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন জশ টাংকে। ইংল্যান্ড তখন জয় থেকে ১৭ রান দূরে, ব্যাটিংয়ে নামেন আহত ওকস। তার পাশে ছিলেন অ্যাটকিনসন, যিনি স্ট্রাইক রক্ষা করতে গিয়ে ছয় হাঁকিয়েছিলেন, যদিও সে বল ছিল ক্যাচ হওয়ার মতোই—আকাশ দীপের হাতে বল লেগে ছয়ে পরিণত হয়।
তবে শেষ হাসি হাসেন সিরাজই। অসাধারণ এক ইয়র্কারে অ্যাটকিনসনকে বোল্ড করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন, আর ভারতকে এনে দেন অবিশ্বাস্য জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ২২৪ (করুণ নায়ার ৫৭; অ্যাটকিনসন ৫-৩৩, টাং ৩-৫৭) ও ৩৯৬ (যশস্বী জয়সওয়াল ১১৮, আকাশ দীপ ৬৬, সুন্দর ৫৩, জাডেজা ৫৩; টাং ৫-১২৫, অ্যাটকিনসন ৩-১২৭)
ইংল্যান্ড ২৪৭ (ক্রলি ৬৪, ব্রুক ৫৩; প্রসিদ্ধ ৪-৬২, সিরাজ ৪-৮৬) ও ৩৬৭ (ব্রুক ১১১, রুট ১০৫; সিরাজ ৫-১০৪, প্রসিদ্ধ ৪-১২৬)
ফলাফল: ভারত ৬ রানে জয়ী, সিরিজ শেষ ২-২ সমতায়।