ঋণ খেলাপিদের তালিকা থেকে (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি) নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট খারিজের পর এবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা রোববার (২৮ ডিসেম্বর) এ আবেদনের ওপর শুনানি স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক। আদালতে মান্নার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ফলে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
হাইকোর্টে মান্নার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।
২৪ ডিসেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান জানান, ঋণের একটা অংশ পরিশোধ করে হাইকোর্টে রিট করেছেন তিনি।
সিআইবি থেকে ওনাদের নামটা যেন প্রত্যাহার করে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগ সন্তুষ্ট হননি। খারিজ করে দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম হচ্ছে দুই শতাংশ জমা দেওয়ার কথা।
তিনি দুই শতাংশের বেশি পরিশোধ করেছেন।
কিন্তু আদালত বলছেন, তালিকা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম প্রত্যাহার করতে আদালত বাংলাদেশ ব্যাংককে কোনো নির্দেশনা দেবেন না। ঋণ গ্রহণকারী ইসলামী ব্যাংক এটি বাংলাদেশ ব্যাংককে (ঋণের তথ্য জানাবে) দেবে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, গত ১০ ডিসেম্বর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে ‘কল ব্যাক নোটিশ’ জারি করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা। মান্না ও তার দুই অংশীদারের ঠিকানায় পাঠানো এই নোটিশে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। শাখা প্রধান তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরিত নোটিশটি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।
তথ্যানুযায়ী, আফাকু কোল্ড স্টোরেজের মালিকানায় মান্না ৫০ শতাংশ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজু ২৫ শতাংশ অংশীদার। গত ৩ ডিসেম্বর পাঠানো নোটিশে বগুড়ার শিবগঞ্জের কিচক বাজারে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির কাছে খেলাপি বিনিয়োগ বাবদ মোট ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ব্যাংকের নোটিশে বলা হয়, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ করেনি। ফলে বকেয়া বেড়ে বর্তমান পরিমাণে দাঁড়িয়েছে। লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও কোনোরকম অগ্রগতি না থাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা হিসেবে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ না করলে ব্যাংক আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। উৎস: বাংলানিউজ২৪