ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছিরউদ্দিনের নেতৃত্বে সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্যের কাছে এসে এই অভিযোগ করে।
প্রশাসনের কাছে ছাত্রদলের মৌখিক অভিযোগ করার সময় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তিনটি অভিযোগ তোলা হয়। এগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি প্রবেশপথে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি, প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা জামায়াতসংশ্লিষ্ট এবং নির্বাচনে কারচুপি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি প্রবেশপথে দুপুরের পর থেকে ব্যাপক হারে জড়ো হয়েছে। এই নির্বাচন তো জামায়াত-শিবিরের নয়, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু তাদের উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, এটা জামায়াতের নির্বাচন। কিন্তু প্রশাসন এতটা নতজানু, তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা ধিক্কার জানাই, যেকোনো সময় এখানে সংঘর্ষ হতে পারে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে ব্যাখ্যা চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, ‘আমরা আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা পুরোপুরি জামায়াতিকরণ হয়েছে।’
কেন এমন ধারণা হয়েছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখেছি ডাকসুর নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন কারচুপি হয়েছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো ফলাফল পাইনি।’
ছাত্রদলের সভাপতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, বিকেল চারটার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশপথে জনসমাগমের তথ্য পেয়েছেন। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন থেকেই আমরা পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। প্রয়োজনে আমরা পুলিশের সঙ্গে আবার কথা বলব, তারা নিরাপত্তা বাড়িয়েছে কি না।’
প্রশাসনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগ নিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কখনো সম্পৃক্ত ছিলাম না। রাজনৈতিক দলের প্রতি আমার কোনো আগ্রহ নেই। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেকোনো মতামত আমি সাদরে গ্রহণ করব।’
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, ‘সারা দিন গণমাধ্যমের সদস্যরা ছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন। পরিস্থিতি দেখেছেন। কোথাও অনিয়মের অভিযোগ উঠলে আমরা দ্রততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন ভোট গণনার চিত্র বাইরে দেখানো হবে। সুতরাং নির্বাচনে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।’ উৎস: প্রথম আলো।