মনিরুল ইসলাম : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, জুলাই - আগস্টের গণ- অভ্যুত্থান পরিবর্তনের এক বিপুল সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার অভাবে সেই সম্ভাবনার অনেকটাই নষ্ট হয়েছে।সরকারের পক্ষপাতমূলক ভূমিকার কারণে সরকার নিজেরা যেমন মানুষকে হতাশ করেছে তেমনি তাদের কারণে গণ - অভ্যুত্থানের অগ্রণী যোদ্ধাদের একাংশও পথ হারিয়েছে।
তিনি বলেন, মাত্র এক বছরের মধ্যে অতীতে গণআন্দোলন - গণ -অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির কোন যোদ্ধারা নিজেদেরকে এভাবে বিতর্কিত করেননি।এ কারণে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া লাখো তরুণ যুবাদের মধ্যে এক ধরনের নৈরাশ্য রাজনীতি বিমুখতা তৈরী হয়েছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণ -অভ্যুত্থানের বার্তা নিজেদের দেহে ধারণ করতে পারেনি। এ কারণে বারেবারে তারা পথ হারিয়েছে, অপ্রয়োজনীয়ভাবে নিজেদেরকে বিতর্কে জড়িয়ে ফেলেছে। তাদের নানা পদক্ষেপে ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এখন সরকারকে যাবতীয় বিতর্ক থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ প্রশস্ত করার আহবান জানান।
তিনি গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় তরুণ যুবাদেরকে রাজপথে জেগে থাকার আহবান জানান।
আজ সোমবার বিপ্লবী যুব সংহতির উদ্যোগে প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত 'গণ - অভ্যুত্থানে তরুন যুবাদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির খতিয়ান' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপি নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এনী বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিকদের নিজেদেরও গুনগত পরিবর্তন বেশী জরুরী। তা নাহলে তারা সাধারণ মানুষের আকাংখ্যা ধারণ করতে পারবেন না।
তিনি বলেন,নিরংকুশ ক্ষমতা হাসিনাকে রক্ষা করতে পারেনি। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর লোভে পড়ে অনেকে পথ হারিয়েছে। ছাত্র তরুণদেরকে অনেকে ব্যবহারের চেষ্টা করছে।তরুণদেরকে এদের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে হবে।
তিনি বলেন কিশোর গ্যাং এর পিছনে বিশেষ কোন রাজনৈতিক মদদ রয়েছে কিনা খুঁজে বের করা দরকার। সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি যে বালির বাধ তৈরী করেছিল যুবশক্তি তা গুড়িয়ে দিয়ে গণ অভ্যুত্থানের রাস্তা তৈরী করেছে। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান শ্রমিকশ্রেণী বেশী জীবন দিলেও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি।
বিপ্লবী যুব সংহতির আহবায়ক যুবনেতা বাবর চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সদস্যসচিব মীর রেজাউল আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম, এবি যুব পার্টির আহবায়ক শাহাদাৎউল্লাহ টুটুল, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোরশেদ মামুন, জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক হারুন অর রশীদ, , নাগরিক যুব ঐক্যের আহবায়ক মাহফুজ খান, বিপ্লবী যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সদস্য জামিরুল রহমান ডালিম, আউয়াল মাহমুদ প্রমুখ।
আলোচনা সভায় যুব সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ বলেন, গণ অভ্যুত্থানে উচ্চকিত তরুন যুবাদের স্বপ্ন আকাংখ্যা হারিয়ে যেতে দেয়া যাবেনা। দেশের যুব সমাজকে তাদের মানবিক জীবন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জেগে থাকতে হবে।
আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই -আগস্ট ছাত্র শ্রমিক জনতার গণ অভ্যুত্থানের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।