সম্প্রতি কুয়েতের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ ফাহাদ ইউসুফ সউদ আল সাবাহ। আল-কাবাস পত্রিকাকে তিনি জানান, কয়েকটি দেশের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বহু ‘প্রতারক’ শনাক্ত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুয়েতে সব নাগরিকত্বের নথি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এমনকি বর্তমান থেকে শুরু করে সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদেরও এই তদন্তের আওতায় রাখা হয়েছে।
আজ সোমবার (১১ আগস্ট) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, এই অভিযান মূলত সেসব বিদেশিকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে, যাঁরা অবৈধভাবে কুয়েতের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। এক বছরেরও বেশি সময় আগে কুয়েতের নাগরিকত্বের জন্য গঠিত সর্বোচ্চ কমিটি এসব মামলা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে—কাঁরা বৈধভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য। যাঁদের নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছে, তাঁদের অনেকের নামও প্রকাশ করা হয়েছে।
চলতি বছর অভিযান তীব্র হওয়ার পর থেকে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, শিগগির নতুন ইলেকট্রনিক জাতীয়তা সনদ চালু করা হবে।
কুয়েত দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে না; অর্থাৎ কুয়েতের নাগরিকত্ব নিতে হলে আগের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হয়। দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ, যার অধিকাংশই বিদেশি।
এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য প্রতারকদের নাগরিকত্ব বাতিল করা। তবে কিছু ক্ষেত্রে ‘রাষ্ট্রের উচ্চ স্বার্থেও’ নাগরিকত্ব বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। কুয়েতে নাগরিকত্ব বাবার মাধ্যমে সন্তানদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেওয়া হয়। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মনোনীত কুয়েতের নাগরিকদের নিয়ে গঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটির মাধ্যমে বিদেশিদেরও নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক দশক আগে কুয়েতের উন্নয়নে অবদান রাখার কারণে অসংখ্য বিদেশি নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। তবে নাগরিকত্বের অধিকার নিয়ে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো—প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার রাষ্ট্রহীন মানুষের (বেদুইন) ইস্যু, যা রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও আইনগত জটিলতার কারণে বহু বছর ধরে সমাধানহীন রয়ে গেছে।