জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে ছয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণপদ্ধতির কথা বলা হলেও তা নিয়ে আলোচনা না করেই, হঠাৎ করে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এটি সঠিক কাজ বলে মনে করছে না দলটি।
দলটি বলছে, আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে, সেগুলো নির্বাচনের আগে একটি আইনি কাঠামোর (লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক) মাধ্যমে বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতে হবে। অন্যথায় জুলাই সনদ গ্রহণ করবে না এনসিপি। মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের বৈঠকের বিরতিতে এ কথা বলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন।
তিনি বলেন, আমরা এটির তীব্র বিরোধিতা করছি। আলোচনার পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা হয়নি, অথচ তারা খসড়া প্রকাশ করেছে। এটা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, নির্বাচনের আগেই সেগুলোর আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রশ্নে আলোচনায় ‘র্যাঙ্ক চয়েস’ পদ্ধতি নিয়ে কয়েক দিন ধরে আলোচনা চলছিল বলেও জানান জাবেদ রাসিন। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি অনুযায়ী আজ বিচার বিভাগ থেকে আরও দুই সদস্যকে যুক্ত করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব এসেছে, যারা ভোট দেবেন। আমরা এই প্রস্তাবে একমত হয়েছি। আমাদের সঙ্গে প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে, কেবল বিএনপি ও কিছু সহযোগী দল ছাড়া।
এনসিপির এই নেতা বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব মৌলিক সংস্কার ছাড়া ‘ফ্যাসিবাদী কাঠামো দূর করা সম্ভব নয়’, সেগুলোর যদি বাস্তবায়ন না হয়, তবে জুলাই সনদে সই করা হবে কি না, তা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বৈঠকে অংশ নিয়েছে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।