শিরোনাম
◈ তিতুমীরের সামনে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ, মহাখালীতে যানজট ◈ মোবাইল নেটওয়ার্কে ইয়াবার হোম ডেলিভারি: উত্তরা-তুরাগ মাদক সিন্ডিকেটে অতিষ্ঠ নগরবাসী ◈ পেলেকে ছাড়িয়ে গে‌লেন, রেকর্ড ১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকায় বিক্রি মেসির কার্ড ◈ মন্ত্রীপাড়া থেকে গ্রেফতার সেই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতমার্কিন নাগরিক এনায়েত রিমান্ডে ◈ কোটিপতি তানিয়া বিয়ে করতে চান বেকার ছেলে, স্বামীকে বসিয়ে খাওয়াবেন সারাজীবন ◈ কাতার একা নয়, তাদের পাশে আছে পুরো আরব ও ইসলামি বিশ্ব: আরব লীগ ◈ ওসি নিয়োগে নতুন নীতিমালা: যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ ◈ পুলিশে ফের বড় রদবদল ◈ সীমানা পুনর্বিন্যাসে ভাঙ্গায় সহিংসতা: থানাঘেরাও, গাড়ি ভাঙচুর ◈ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা

প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:১২ দুপুর
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ওসি নিয়োগে নতুন নীতিমালা: যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ

ওসি হতে চাইলে মনে রাখতে হবে সেসব কথা

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি বাছাইয়ের জন্য নতুন নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। ওসির এই ক্ষমতাধর পদটি পেতে আগ্রহী পরিদর্শক পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে কঠোর যোগ্যতার শর্ত।

পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতির কারণে দুর্নাম হওয়া এই পদে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যই এই নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।

সাধারণত একজন ওসি বিপুল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকেন। তদন্ত তদারকি থেকে শুরু করে সম্পদ ব্যবস্থাপনা—থানার সবকিছুই থাকে তার অধীনে।

এই নীতি প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যাদের চাকরির রেকর্ড ভালো, প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা ও সুনাম আছে, শুধুমাত্র তাদেরই ওসি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হবে। তালিকা থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ওসি নির্বাচন করা হবে।'

সম্প্রতি পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের অনুমোদিত নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, একজন কর্মকর্তা সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত ওসির পদে থাকতে পারবেন।

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় পাঁচ মাস আগে এ উদ্যোগ নেওয়া হলো, যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ওসিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

দেশে থানা আছে ৬৬৪টি। সেগুলো হলো:

আটটি রেঞ্জের অধীনে ৫৩০টি থানা
আটটি মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতায় ১১০টি থানা
রেলওয়ে পুলিশের অধীনে ২৪টি থানা

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, যারা অন্তত তিন বছর পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং থানা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কোর্স সম্পন্ন করেছেন, কেবল তারাই তালিকাভুক্ত হতে পারবেন।

৫৪ বছরের বেশি বয়সী কর্মকর্তারা এ পদের জন্য যোগ্য হবেন না। তবে এইচএসসি বা তারচেয়ে উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

চাকরিজীবনের যেকোনো সময়ে আর্থিক অনিয়ম বা নৈতিক স্খলনের কারণে শাস্তি পেলে কোনো কর্মকর্তা আর এ পদের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

যদি কোনো কর্মকর্তা পরিদর্শক থাকা অবস্থায় দুইবার বা তার বেশি শাস্তি পান, কিংবা পূর্বে বড় অপরাধের জন্য তিনবার বা তার বেশি শাস্তি পান, তবে তাকে ওসির দায়িত্ব দেওয়া হবে না।

শুধু তাই নয়, নির্বাচনের এক বছর আগে ছোট অপরাধে বা দুই বছর আগে বড় অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত হলে তিনিও অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

পরিদর্শকদের ওসি হতে হলে পরপর পাঁচ বছরের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে (এসিআর) গড়ে অন্তত ৮০ নম্বর পেতে হবে এবং টানা তিন বছর কোনো মূল্যায়নকারীর নেতিবাচক মন্তব্য থাকা চলবে না।

৩ জুলাই আইজিপি বাহারুল আলম স্বাক্ষরিত নীতিটি বাস্তবায়নের জন্য সব ইউনিটপ্রধানের কাছে পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারকে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, 'এই নীতির উদ্দেশ্য হলো, অত্যন্ত পেশাদার কর্মকর্তাদের ওসি হিসেবে নির্বাচন নিশ্চিত করা।'

তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক নেতাসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি পছন্দের ব্যক্তিকে থানায় ওসি হিসেবে নিয়োগের জন্য লবিং করেন। নতুন এই নীতি এসব লবিং বন্ধ করবে।'

কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের অনুগত কর্মকর্তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) 'লাভজনক' পদে নিয়োগ পেয়েছিল।

সে সময়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ থানায় পদায়নের ক্ষেত্রে আনুগত্য ও লবিং দুটোই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কর্মকর্তারা তাদের ঊর্ধ্বতনদের ঘুষ দিয়ে পর্যন্ত পদায়ন নিয়েছে, এমন অভিযোগ ছিল ব্যাপক। এমনকি অনেকে রাজনৈতিক সম্পর্ক ব্যবহার করে বিপুল সম্পদও গড়ে তুলেছিলেন বলে তারা জানান।

গত ২৪ মার্চ এক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারাধীন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২০১৮ সালের পর পুলিশ বাহিনীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বেড়ে যায়।

তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক মদদপুষ্ট কিছু কর্মকর্তা আইজিপির নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিজেদের মতো করে কাজ করতেন। এমনকি তাদের অনেকের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

এসব কর্মকর্তার ক্ষমতার ইঙ্গিত দিয়ে মামুন জানান, ডিএমপির আওতাধীন বেশ কয়েকজন ওসি ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাসভবনে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও যোগ দিতেন। উৎস: ডেইলিস্টার।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়