মনিরুল ইসলাম: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা সমালোচনা করে, তাদেরকে "গণতন্ত্রের শত্রু" বলে অভিহিত করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে মহানগর বিএনপি (উত্তর ও দক্ষিণ) আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন। সমাবেশ শেষে ফকিরেরপুল থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, বিজয়নগর হয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, “যারা আজকে তারেক রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে কথা বলে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু। তারা দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে, দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। আমরা আজকের এই শান্তিপূর্ণ র্যালির মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই—গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের কোনো আপস নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ধিক্কার জানাই সেই তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদের যারা তারেক রহমান সম্পর্কে অমার্জিত ও অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছেন। তবে আমরা প্রতিশোধমূলক ভাষা ব্যবহার করব না। আমাদের নেতাকে কটুক্তি করলে আমাদের মর্যাদা কমে না, বরং ছোট হয় তারা যারা এমন ভাষা ব্যবহার করে।”
মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লালচাঁদ সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হতে হবে। যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এসব ঘটনা দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অংশ।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা যেন কারও পাতা ফাঁদে পা না দিই। আমাদের উত্তেজিত করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাবো।”
তিনি জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে আলোচনা শেষে একটি সময় ঠিক হয়েছে।
“২৬ ফেব্রুয়ারির সেই নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হওয়া উচিত। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, চাকরির সুযোগ সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।”
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “একটি ব্যক্তি ও তার দল (ইঙ্গিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) বিএনপিকে নিয়ে নানা বক্তব্য দিচ্ছেন, অথচ অতীতে তারা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এই বাংলাদেশ বিএনপির স্থায়ী ঠিকানা। আমাদের কেউ এখান থেকে সরাতে পারবে না।”
তিনি জামায়াতে ইসলামি প্রসঙ্গে বলেন, “এই দল শুধু কথায় বড়, কিন্তু কাজের জায়গায় দুর্বল। বিভিন্ন গ্রুপ থেকে গোপনে অর্থ সংগ্রহের অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। এসবের হিসাব একদিন দেওয়া লাগবে।”
ন্যাশনাল রিপাবলিক পার্টি এবং বাংলাদেশ চিলড্রেন্স পার্টির কিছু নেতাকেও সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এদের কেউ কেউ এখন জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানকে নিয়ে মন্তব্য করছেন, অথচ নিজেরাও ইতিহাস জানেন না।”
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম মজনু এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন। বক্তব্য দেন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।