শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ১০ জুলাই, ২০২৫, ০৭:০১ বিকাল
আপডেট : ১৬ জুলাই, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

অনেক কষ্ট করে এই জাতীয় পার্টি করেছি,  মুসলিম লীগ, জাসদের  মত হয়ে না যায় : ব্যারিস্টার আনিস

মনিরুল ইসলাম  : জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, জিএম কাদের একজন কর্তৃত্ববাদী। তিনি কারও পরামর্শ মানেন না। নিজের ইচ্ছে মত দল পরিচালনা করেন। 

তিনি জিএম কাদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, কাউন্সিল দেন। তখন দেখবো আপনি কত ভোট পান আর আপনার বিপরীতে যে দাঁড়াবে সে কত ভোট পায়। দলের ভিতর আপনার (জিএম কাদের) স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাই একমত। কিন্তু দল থেকে বহিষ্কারের ভয়ে অনেকে মুখে খুলে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত জাতীয় পার্টির একাত্মতা প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির চলমান বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন সাবেক এমপি ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও কুমিল্লার সাবেক এমপি অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে দলটির প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।

জিএম কাদেরের অনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে একাত্মতা প্রকাশ অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমূদ,এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুর হাতে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে  জাতীয় পার্টির বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন  দলটির  নেতাকর্মীরা। 

আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন কো- চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য,  সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, এ টি ইউ এম তাজ রহমান, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, আরিফুর রহমান খান, মাসরুর মওলা, জসীম উদ্দীন ভূঁইয়া।

সভাপতির বক্তব্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন বর্তমান রাজনৈতিক নতুন প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টির বিরাট সম্ভাবনা আছে। এই সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে আমরা দলকে ঐক্যবদ্ধ করছি। কোনভাবেই জাতীয় পার্টিতে ভাঙতে দেয়া হবে না। 

তিনি বলেন,অনেক কষ্ট করে এই পার্টি করেছি, এই পার্টি যেন মুসলিম লীগ, জাসদের  মত হয়ে না যায়। সেজন্য জাতীয় পার্টিকে  বড় করার চেষ্টা করছি। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, জাতীয় পার্টি ভাঙবে না,আরো বৃহৎ হবে। 

তিনি বলেন, এরশাদ সাহেব আমাকে বলে গেছেন, এ পার্টি  যেন সাধারণ মানুষের মাঝে থাকে। সেজন্য আমরা কাজ করছি। আমরা যখন দেখলাম পদ নিয়ে পার্টিতে বাণিজ্য হয়, তখন আমি বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য চেয়ারম্যান কে বলেছি। কিন্তু চেয়ারম্যান তা বন্ধ করেন নাই। গণতান্ত্রিক উপায়ে পার্টি পরিচালনার জন্য ২০-১ ক ধারা বাতিল করার জন্য বলেছি। তিনি তাও শোনেনি। 

জিএম কাদের কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু তিনি দলের স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। এরশাদ সাহেবও কোন সিদ্ধান্ত আমাদের সাথে আলোচনা ছাড়া নিতেন না। কিন্তু জিএম কাদের নিজেকে খোদার চেয়ে বেশি শক্তিশালী মনে করেন। তিনি বারবার বলেন আমি চেয়ারম্যান আমার কথায় সব। আমি যদি বলে রাত তাহলে রাত। এভাবে কোন রাজনৈতিক দল চলতে পারে না। সকলের সাথে আলোচনা ছাড়া কোনো সরকারও চলে না। অথচ  জিএম কাদের, নিজের কর্তৃত্ব বজায় রেখে দলের চালাতে চায়।

এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশে একটি জাতীয় পার্টি থাকবে। দুইটা জাতীয় পার্টি  থাকবে না। কোনো সিন্ডিকেটের মধ্যে জাতীয় পার্টি বন্দী থাকবে না। জাতীয় পার্টি হবে সকল তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। 

তিনি বলেন, দেশ আজ অনিশ্চিতার মধ্যে আছে, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে   দেশে একটা পরিবর্তন হয়েছে। পৃথিবীর দেশে দেশে ধরনের পরিবর্তন হয়। পরিবর্তন সময়ের দাবি। 

আমাদের দলেও পরিবর্তনের সময় এসেছে, আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে জাতীয় পার্টিকে গড়ে তুলতে চাই। সময়ের দাবিতে, গণতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালিত হবে।

আমরা রাজনীতি করি মানুষের জন্য, রাজনৈতিক সহাবস্থানের জন্য, কারো বিরুদ্ধেচারণের জন্য জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেন না। আগামী দিনে সকলকে নিয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয় পার্টি করা হবে। যারা জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে চলে গেছে, তাদেরকে নেওয়া নিয়ে আসা হবে। সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে পল্লীবন্ধু এরশাদের  স্বপ্ন বাস্তবায়ন আমরা কাজ করব। 

রুহুল আমিন হাওলদার বলেন, জিএম কাদের একটি ব্যারিস্টারকে মহাসচিব করেছে। সে আমাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে। সে বলে আমরা সিনিয়ররা বেইমানি করেছি। তার কথায় আঘাত পেয়েছি। তার উচিত, শালীন ভাবে কথা বলা। সে যে এমপি হয়েছে, তার পিছনে আমার কি অবদান তা যেন স্মরণ রাখে। 

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জিএম কাদের  অসাংগঠনিক, অগণতান্ত্রিক ও বেআইনিভাবে আমাদের ১১ জনকে অব্যাহতি দিয়েছে। এই অব্যাহতি আমরা মানি না। আমরা আগামী কাউন্সিল পর্যন্ত  নিজ নিজ পদে বহাল আছি। জি এম কাদের এককভাবে তার স্ত্রীকে নিয়ে সিন্ডিকেট করে দল চালাতে চায়, কিন্তু আমরা যারা এ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা, তারা কোনভাবে জাতীয় পার্টিকে ভাঙতে দেব না, ছোট  হতে দেব না, কোন সিন্ডিকেটের হাতে জাতীয় পার্টিকে তুলে দিতে পারি না। 

মুজিবুল হক চুন্নু আরো বলেন, কাউন্সিল আহ্বান করার পর, কাউকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুযোগ নেই, শুধুমাত্র কাউন্সিলে যাতে করে জিএম কাদেরকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে না পারে, সেজন্য  তিনি ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে, তড়িঘড়ি করে আমাদের অব্যাহতি দেয়ার নাটক করেছে। তবে যে উদ্দেশ্যে তিনি এই নাটক করছে, তা তিনি সফল হতে পারবেন না। সারাদেশে জড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাখ লাখ এরশাদ প্রেমিক জাতীয় পার্টির কর্মী তার সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দিবে ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়