শিরোনাম
◈ ঐক্যের ডাকে প্রমাণ হয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিই বিএনপি’র দোসর: ওবায়দুল কাদের ◈ গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে রোমে ফের আলোচনা শুরু হচ্ছে রোববার ◈ বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করায় পাকিস্তানে কন্যার পা কেটে নিলেন বাবা ◈ দ্রুত গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে নেতানিয়াহুকে বাইডেনের তাগাদা ◈ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সেতু ভবন পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী ◈ চলমান পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতে আস্থার সংকটে ক্রেতারা ◈ শ্বেতাঙ্গ নারীদের জুম বৈঠকে কমলার জন্য ২০ লাখ ডলার সংগ্রহ ◈ এইচএসসির উত্তরপত্র আপাতত বোর্ডে না পাঠানোর নির্দেশ ◈ হত্যা চেষ্টার স্থলে ফিরে যাওয়ার সংকল্প ট্রাম্পের  ◈ দেশকে পঙ্গু করে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১২:১৫ রাত
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১২:১৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রীতি ওরাং হত্যার ন্যায্য বিচার চাই 

ইমতিয়াজ মাহমুদ

ইমতিয়াজ মাহমুদ: চা বাগানের শ্রমিকদের জীবন অনেক কঠিন। ওরা একটা অন্যায্য মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হয়। এই দেশের সকল নাগরিকের মতো সকল অধিকার ওরা পায় না। প্রজন্মের পড় প্রজন্ম ধরে প্রায় ক্রীতদাসসুলভ অমানবিক জীবন যাপন করে প্রায় প্রতিটা চা শ্রমিক পরিবার। সেইরকম একটি পরিবার থেকে একটি শিশু ঢাকায় এসেছিল গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে। কাজ নিয়েছিল একজন সাংবাদিকের বাসায়। সাংবাদিক মহোদয় একটি শীর্ষস্থানীয় কাগজের সম্পাদকীয় বিভাগের উচ্চপদে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক। সেই শিশুটি-প্রীতি উরাং, ওর নাম। ওর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। এই মৃত্যুটি নিয়ে খুব কার্যকর কোনো ব্যবস্থা যে নেওয়া হয়েছে, সেটা দেখা যাচ্ছে না। কোনো মামলা হয়েছে কিনা আমি জানি না। হলেও কী রকম মামলা হয়েছে, সেটাই বা কে জানে। এরকম ঘটনায় অনেক সময় অপমৃত্যুর মামলা বা ইঊডি মামলা করে প্রবর্তিতে সেটা দায়াসারা তদন্ত করে ঘটনা চাঁপা দেওয়া হয়। যাদের বাসায় ঘটনা ঘটে, ওরাও ভিক্টিমের দরিদ্রপিতামাতাকে কিছু টাকাপয়সা দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়। অনেকসময় পোস্ট মরটেমও হয় না। গরিবের শিশু কন্যা, ওর জন্যে কে বিচার চাইবে। এই ঘটানতেও সেরকম কিছু হচ্ছে কিনা সেইটা কে দেখবে? সাংবাদিকরা কি সাংবাদিকের বাসার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় করবে? 

আমাদের দেশে পেশাজীবীরা এক অদ্ভুত নীতি অনুসরণ করে। অনেকটা কাক কাকের মাংস খায় না এ ধরনের। আমাদের পেশায়ও, অর্থাৎ উকিলদের মধ্যেও এরকম প্রবণতা মাঝে মাঝে দেখা যায়। ডাক্তার সাহেবেরা নানা সময় একাট্টা হয়ে যান পেশাগত নীতি ভুলে সহকর্মীদের সমর্থনে। আমাদের সাংবাদিকরা প্রাথমিকভাবে ঘটনাটা রিপোর্ট করেছেন বটে, এরপর কোনো ফলোআপ করবেন কিনা কে জানে। আপনি দেখুন। তেরো বছর বয়সের একটা শিশু, নিতান্ত অভাবের তাড়নায় ওর পিতামাতা ওকে ঢাকায় পাঠিয়েছে অজানা অচেনা একটা পরিবারে কাজ করার জন্যে। দিনরাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতো মেয়েটা। জীবনসংগ্রামে পরাজিত কোনো মানুষ তো সে হওয়ার কথা নয়। বেঁচে থাকাটা ওর কাছে প্রতিদিনের একটা সংগ্রাম আর সেই সংগ্রামে সে লড়ে যাচ্ছিল। কী পরিস্থিতিতে এরকম একজন সংগ্রামী কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে এটা দেখা এবং এই মৃত্যুর জন্যে যদি গৃহকর্তার বা গৃহকর্ত্রীর কোন দায় থাকে ওদের শাস্তি নিশ্চিত করা কি এই রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয়? 

আপনাদের উঁচু উঁচু ভবনে এরকম একজন প্রীতি ওরাং এসেছিল পেটের দায়ে কাজ করে খাওয়ার জন্য। এই বিশাল সমৃদ্ধ নগরীর স্বচ্ছল আনন্দময় জীবন ওর জন্যে ছিল না। এই নগরের বড় বড় সব স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ওর জন্য ছিল না। এখানের সিনেমা হল, শিল্পকলা একাডেমী আপনাদের মহান গ্রন্থমেলা এইসবের কিছুই সে চায়নি। সুউচ্চ অট্টালিকায় একটি গৃহে আবদ্ধ থেকে নিতান্ত দুই বেলা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে নিয়োজিত ছিল মেয়েটা। এই মেয়ে আত্মহত্যা করবে এই কথা আমি মানি না। সংগ্রামী চা শ্রমিকের সংগ্রামী কন্যা ছিল প্রীতি। আপনাদের মতো ললিতলবঙ্গলতিকা ধরনের নরম মেয়ে নয়। এটা একটা হত্যাকাণ্ড। আমি প্রীতি ওরাং হত্যার বিচার চাই। ন্যায্য বিচার চাই। যারা যারা এই হত্যার জন্যে দায়ী ওদের সকলের শাস্তি চাই। কঠোর শাস্তি চাই। বিচার চাই। বিচার কেন করবেন না? লেখক: আইনজীবী। ফেসবুকে ১০-২-২০২৪ প্রকাশিত হয়েছিলো। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়