শিরোনাম
◈ খান ইউনুসে চলছে প্রচণ্ড লড়াই : আটকা পড়েছে প্রায় ২ লাখ ফিলিস্তিনি ◈ দেশের ৮ জেলায় দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা ◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু ◈ হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন আদায় করে নেবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০২:০৭ রাত
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০২:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তৃণমূলের নেতারা শেখ হাসিনার দিকেই তাকিয়ে আছেন

দীপক চৌধুরী

দীপক চৌধুরী: রাজনীতিতে শেষ কথা নেই। এটা বহুবার প্রমাণ হয়েছে। এটা অতি সহজে হয়ে থাকে এদেশে। কেউ কি জানতো, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে রাতারাতি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাবেন! কিন্তু তিনি তা পেয়েছেন। অথচ ওই নির্বাচনী এলাকায় দিনের পর দিন রাজনীতি করে তৃণমূল থেকে ওঠে আসা নেতারা মনোনয়ন পাননি। দল থেকে  মনোনয়ন পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা বিএইচ হারুনের মনোনয়ন শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছে। তিনি ইসিতে আপিল করবেন বলে  শোনা যায়। যারা দীর্ঘদিন থেকে একটি দলের আদর্শের সঙ্গে মিশে গেছেন, নানা রকম ভয়, অর্থের ‘টোপ’ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে, সব রকম লোভ ঠেলে দিয়ে দলীয় আদর্শ বিসর্জন দেননি তাদের কথা কী আমরা একবারও ভাবি? না, ভাবি না। সম্ভবত এ কারণেই বলা হয়ে থাকে রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। শেষ কথা নেই। আর এটাও সত্য যে, বহুবার প্রমাণ হয়েছে এদেশে অনেক নেতাকেই কেনা যায়, শুধু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে কেনা যায় না। তাঁর শরীরে তো বঙ্গবন্ধুর রক্ত বইছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা অতীতে বিএনপি, জাগদল, জাতীয় পার্টিতে গেছেন। এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন। নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। এরশাদের পদলেহন করেছেন। এমনকি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গুলির মুখে রেখেও তারা প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।  

এবার অন্যপ্রসঙ্গ। রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলেছেন, ‘জাপা এবার সাবালক হয়েছে। আমরা এবার  জোটফুট নিয়ে ভাবছি না। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি।’ প্রশ্ন ওঠে, তাহলে এতোদিন দলটি নাবালক ছিলো? হয়তো রাজনীতির নানারকম হিসাব-নিকাশে এটি এখন ‘সাবালক’ হয়েছে। কিন্তু এটা তো অনেকেই জানেন, বেগম রওশন এরশাদ দীর্ঘদিন থেকেই গণতন্ত্রের পক্ষে রাজনীতি করেছেন। গত ২০১৪ বা ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয় ও মানুষের পক্ষে। গণতন্ত্রের পক্ষে। কিন্তু এবারের দ্বাদশ নির্বাচনে তিনি নির্বাচন না করার ‘অভিমান’ করেছেন। এর পেছনে রয়েছে তাঁর প্রতি জাতীয় পাির্টর রহস্যজনক ও অরাজনৈতিক আচরণ। যে আচরণ তাঁকে ক্ষুব্ধ করেছে।  যদিও তিনি একসময় স্বৈরশাসক এরশাদের শাসনামলে ‘ফার্স্ট লেডি’ ছিলেন। 

ইতিহাসে প্রমাণিত সত্য যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। তৃণমূলের মানুষ এই দলে কীভাবে ঢুকেছে এর এক্সপ্লেনেশেন অন্যদিন দেবো। জাতীয় পার্টি ‘স্বৈরাচারি দল’ হিসেবে পরিচিত। জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে আদালত থেকেও বলা হয়েছে। আর বিএনপি কী? বিএনপি কি গণমানুষের দল? না, আন্তর্জাতিক একটি দেশ পরিষ্কার বলেছে, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন তকমা দিয়েছিল কানাডার আদালত। গত বছরের ২৫ জানুয়ারি (সম্ভবত) দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে অভিহিত করে কানাডার  ফেডারেল কোর্ট। একটি জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন নিষ্পত্তিকালে আদালতের বিচারক এ অভিধা  দেন। বিএনপির এক কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ করে  দেওয়ার বিরুদ্ধে ওই জুডিশিয়াল রিভিউটি দায়ের করা হয়েছিল। ২০০২২-এর ২২  ফেব্রুয়ারি এই খবর দিয়েছিল কানাডাভিত্তিক বাংলা সংবাদমাধ্যম ‘নতুনদেশ’।  ফেডারেল  কোর্টের বিচারক  হেনরি এস  ব্রাউন গত ২৫ জানুয়ারি এই রায় দেন।  মোহাম্মাদ জুয়েল  হোসেন গাজী নামে ঢাকার মিরপুরের  স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন কর্মী তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পর কানাডার   ফেডারেল  কোর্টে এই রিভিউর আবেদন করেছিলেন।

আসলে জনগণকে ঠেকিয়ে রাখার দিন কি আর আছে? জনগণ কী চায়? জনগণ কাকে চায়, কেন চায়? এই হিসেবটা এখন বড়। প্রকৃতপক্ষে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশে মানুষ টানতে পারেন। তাঁর ক্ষমতাকালে উন্নয়নের জোয়ার দেখেছে মানুষ।  মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারেন। আমরা দেখেছি, সমাবেশে জনগণকে টানবার  মতো মানুষের অধিকার আদায়ের কথাও চিন্তা করে থাকেন। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া খবরে নিশ্চিত হওয়া যায়, কোনোরকম মনস্তাত্ত্বিক চাপে যাতে সাধারণ  মানুষ না পড়ে এ কারণেই নির্বাচনমুখী করেছেন জনগণকে। জনগণের অংশগ্রহণ করাটাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। 

মানুষ যখন নির্বাচনি আমেজে আর নির্বাচনমুখি তৎপড়তায় ব্যস্ত সেখানে হরতাল-অবরোধ ভোগান্তি বাড়িয়েছে। বিএনপির এমন কর্মকাণ্ডকে সন্ত্রাস হিসেবে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আখ্যায়িত করেছে। শেষ কতা হচ্ছে, বিএনপি নির্বাচনে না-ও আসতে পারে। তবে জাপা? জাপার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা কীভাবে হবে এটা নিয়ে রাজনৈতিক গবেষকেরাও বুঝতে পারছেন না। এটা স্পষ্ট করার জন্য মুজিবুল হকরা যতটা অপেক্ষা করুণ না কেন বাস্তবতা খুবই কঠিন। শীর্ষশ্রেণির একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, জাপার কয়েকটি আসনকে আওয়ামী লীগ অলিখিত ছাড় দিতে পারে। এ কারণে আওয়ামী লীগ ‘দুর্বল’ প্রার্থী দেবে। প্রকৃতপক্ষেই সমঝোতা হবে না হয়তো। তবে  দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে থাকা জাপার ভবিষ্যত ভালোর দিকে।  ‘নাবালক’ জাতীয় পার্টিকে ‘সাবালক’ করছে আওয়ামী লীগ! লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, কথাসাহিত্যিক ও ফিল্মমেকার

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়