আরিফ জেবতিক: আমার মেয়েরা একটা সময় বিদেশে পড়াশোনা শুরু করেছে, তাই এরকম ক্লাসরুমের সাথে আমার সরাসরি পরিচয় আছে। এখানে কিছু বিষয় বিবেচনা করতেই হবে। প্রথমটি হচ্ছে ক্লাসের গ্রুপ সাইজ। একটি ক্লাসে কুড়ি থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকলে এনগেজিং ক্লাস করানো সম্ভব। কিন্তু আমাদের দেশে প্রতিক্লাসে ৫০ জনের মতো বাচ্চা থাকে। এর সুরাহা করতে হলে আমাদের সেকশন বাড়াতে হবে, শিক্ষক বাড়াতে হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ক্লাসের ডিজাইন। আমি দেখেছি দেশেও ভালো ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলগুলোতে ক্লাসগুলো বিস্তৃত। একপাশে গোল টেবিল আছে গ্রুপ ওয়ার্কের জন্য, অন্যপাশ খোলামেলা যাতে বাচ্চারা লাফালাফি কিংবা অন্যান্য ফিজিক্যাল ওয়ার্ক করতে পারে। আমার মনে হয় এটির সমাধানও আমাদের দেশে সহজেই করা সম্ভব।
তৃতীয় যে বিষয়টিতে আমাদের জরুরিভাবে নজর দিতে হবে, সেটি হচ্ছে শিক্ষকদের জীবনমান উন্নত করার বিষয়টি। ডাল আর আলুভর্তা দিয়ে খেয়ে বেসরকারি শিক্ষকরা এতো লাফালাফি করার এনার্জি কোথা থেকে পাবে, সেটা আমাদের বুঝতে হবে। কারণ নতুন কারিকুলামে প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগ কমে আসবে। এতে শিক্ষকরা দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হবেন। আমি বেশকিছু শিক্ষকদের সাথে কথা বলে বুঝেছি যে, তরুণ শিক্ষকরা এই কারিকুলামকে ভালোভাবেই নিয়েছেন। কিন্তু তাঁরাও এর চ্যালেঞ্জ নিয়ে চিন্তিত। নতুন কারিকুলাম নিয়ে আমাদের খোলামনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনি সরকারকে পছন্দ করেন, তাই কারিকুলাম ভালো, আর আপনি সরকারকে দেখতে পারেন না তাই কারিকুলাম খারাপÑ এভাবে শর্টসাইটেড দেখলে হবে না। কারণ এটি জাতির ভবিষ্যতের প্রশ্ন, বিএনপি আওয়ামী লীগের কুস্তাকুস্তি এখানে না আনাই ভালো হবে। লেখক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট