আহসান হাবিব: কাজটা সহজ নয়, আবার খুবই সহজ। সামান্য কয়েকটা বিষয় জানলেই এমন একটা কণ্ঠ আপনি পেতে পারেন। প্রতিটি মানুষের কণ্ঠস্বর আলাদা। তার বৈজ্ঞানিক কারণ আছে। আজকের আলোচনা সেটি নিয়ে নয়। আমাদের আজকের আলোচনা এই কণ্ঠটি কি করে মুদ্রাদোষ মুক্ত হবে। এর চাবিকাঠি নিহিত আছে উচ্চারণের মধ্যে এবং তা প্রধানত স্বরধ্বনির উচ্চারণের মাধ্যমে। ব্যাঞ্জনবর্ণ নিয়ে আমাদের চিন্তা আপাতত নাই। সেটা প্রমিতকরণের সময় আঞ্চলিকতার সঙ্গে জড়িত। এটিও অন্য প্রসংগ। এখন স্বরধ্বনিগুলি ঠিকমত উচ্চারণ করতে পারলেই আপনার কণ্ঠস্বর মুদ্রাদোষ মুক্ত হবে বলে আশা রাখছি। কারণ এই ধ্বনিগুলি উচ্চারণের সময় মুখমণ্ডলের নির্দিষ্ট কাঠামো আছে। যেমন ‘আ’ উচ্চারণ করার সময় ঠোঁট কতটুকু ফাঁক করবেন তার উপর নির্ভর করছে আপনার উচ্চারণ ঠিক হল কি না এবং সেইসঙ্গে কণ্ঠস্বরটি সঠিক শোনাল কি না। ঠোঁটের দূরত্ব একটু কমবেশি হলেই স্বর বিকৃত হয়ে পড়বে। কারণ কি?
কারণ হচ্ছে ‘আ’ শব্দটি (sound) একটি ধ্বনি আর ধ্বনি হচ্ছে সেটাই যা ভোকাল কর্ডে উৎপাদিত হয়ে মুখমণ্ডলের কোন অঙ্গকে স্পর্শ না করে বাইরে বেরিয়ে আসে। যদি তা স্পর্শ করে তবে তা বিকৃত হয়ে পড়বে এবং কণ্ঠস্বর দোষযুক্ত শোনাবে। অন্যান্য স্বরধ্বনির জন্যও একই বৈশিষ্ট্য। সাধারণ কথোপকথনে এটা তেমন কঠিন কাজ নয়, কিন্তু একজন শিল্পীর জন্য চ্যালেঞ্জিং। কারণ তাকে একটা বড় পরিধি (Range) সামলাতে হয়। ধরুন ‘এ’ ধ্বনিটি উচ্চারণ করতে হবে তারার মধ্যমায়, তখন তার চরিত্র বজায় রাখা কঠিন অথচ রাখতে হবে। কণ্ঠ পরিধির সবখানে স্বরধ্বনির উচ্চারণ যথাযথ করতে পারলেই একজন শিল্পীর কণ্ঠস্বরটি মুদ্রাদোষ মুক্ত হয়ে পড়বে। লেখক: ঔপন্যাসিক