মনজুরুল হক: প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লোপাটের খবরে মুখ ভেটকে বলেছিলেন, ৪শ কোটি ৮শ কোটি টাকা খুব বড় কিছু নয়। আমরা নির্বোধরা শুনে ভেবেছিলাম; এই ফিগার যেহেতু খুব বড় কিছু না, তার মানে দেশের অনেক টাকা আছে। অমন ৮শ কোটি খোয়া গেলে চিন্তার কিছু নেই। আমরা নির্বোধরা বুঝতেই চাইনি, ওইসব লোপাট হওয়া, মেরে দেওয়ার, চুরি যাওয়া, পাচার করা, চুরি, ডাকাতি করা, ব্যাংক লুট করা, ঋণ নিয়ে মেরে দেওয়া, ওভার ইনভয়েসিং করে কোটি কোটি বিদেশে পাচার হওয়া টাকাগুলো আসলে আমাদের টাকা। মানে আমাদের খাবার, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান, লাশ দাফনের টাকা। ওই টাকা যেভাবেই লোপাট হোক সেসব আর ফিরে আসে না। আমরা বুঝতেও চাইনি ওই শূন্যস্থান কীভাবে পূরণ হয়? সরকারইবা কেন অত বড় বড় চুরি-ডাকাতির পরও চিন্তিত হয় না?
কারণ সরকার ওই সকল টাকা সুদে-আসলে জনগণের ঘাড় মটকে আদায় করে নেয়। উচ্চ হারে জারি থাকা ট্যাক্স আরও বাড়িয়ে, সরকারি ফিস বাড়িয়ে, নানাবিধ ট্যাক্সের খাত বাড়িয়ে, স্ট্যাম্প ফি বাড়িয়ে, জমা টাকা থেকে এআইটি কেটে, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির দাম বাড়িয়ে আদায় করে। যা দিতে আমরা বাধ্য। এবার নেট ঘেটে ‘বিশ্ববাজার’ নামক অদৃশ্য বাজারে ঘুরলে দেখবেন করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ, খরা, অতিবৃষ্টি অজুহাতে সারা বিশ্বে যে পণ্যমূল্য বেড়েছিল তা সব দেশেই কমে এসছে। এমনকি দেউলিয়া শ্রীলংকায় ২০০ রুপির চাল ফের ৫০ রুপিতে নেমেছে। অর্থাৎ যেসব দেশ করোনা, যুদ্ধ এসব কারণে দাম বাড়িয়েছিল তারা কমিয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে? মোটেই নয়। দাম বাড়িয়ে ডিজাস্টার ম্যানেজ করার পর দাম কমিয়েছে।
কেবল বাংলাদেশ কমায়নি। কেন কমায়নি? কারণ লোপাট হওয়া, মেরে দেওয়ার, চুরি যাওয়া, পাচার করা, চুরি- ডাকাতি করা, ব্যাংক লুট করা, ঋণ নিয়ে মেরে দেওয়া, ওভার ইনভয়েসিংয়ে পাচার হওয়া টাকার ঘাটতি মেটাতে। ঘাটতি মিটে যাওয়ার পর কমায়নি কেন? কারণ আবারও চুরি-ডাকাতি হবে ভেবে আগাম স্টক ম্যানেজমেন্ট। তার উপর সরকারও এখন ব্যবসায়ীদের মত লাভ করতে চায়। জনগণের উপর সর্বশেষ জুলুম কোনটা জানেন তো? বেনসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডের উপর ২৭.৫ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে।
লেখক ও ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট