শিরোনাম
◈ আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে আরব আমিরাত ◈ ভারত আসবে না বাংলাদেশ সফরে, হবে না এশিয়া কাপও ◈ এপ্রিলে  ১০১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি ◈ ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস আলম ◈ জনআকাঙ্খা ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জনতা পার্টি বাংলাদেশের ◈ ভারত-পাকিস্তান তৃতীয় দিনের মতো সংঘর্ষে জড়ালো, যুদ্ধাবস্থা সীমান্তজুড়ে ◈ 'আপ বাংলাদেশ' নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ◈ দেশে অনলাইন জুয়া সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে: কঠোর হচ্ছে সরকার ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ (ভিডিও) ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৬ জুন, ২০২৩, ০২:২০ রাত
আপডেট : ০৬ জুন, ২০২৩, ০২:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইনু ভাই আসেন না কেন?

শামসুদ্দিন পেয়ারা

শামসুদ্দিন পেয়ারা: বাঙলাদেশের স্বাধীনতার প্রস্তুতিপর্বের প্রধান সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের গেরিলাপর্যায়ের সশস্ত্র সংগ্রামের প্রধান রণনীতি ও রণকৌশল নির্ধারক ও তা বাস্তবায়নে নেতৃত্বদানকারী নেতা, স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে জন্ম নেওয়া বিপ্লবী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ। জাসদ নেতাদের সবাই রোগশয্যায় তাঁকে অন্তত একবার এসে দেখে গিয়েছেন। কুশলাদি জানতে চেয়েছেন। শয্যাপার্শ্বে কিছুক্ষণ অবস্থান করে তাঁর রোগমুক্তি কামনা করেছেন। সবার সঙ্গে কথা বলা দূরে থাক, তিনি যে সবাকে চিনতে পেরেছেন, তাও নয়। তবু যাকে বলে পুরানো ‘কামারেডারি’, তার টানে এসেছেন। 

আজ হয়তো বিপ্লব বা সমাজতন্ত্র এদেশের রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু ১৯৬০-৭০ এর দশকে এ দুটি আদর্শ তো ছিলো রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি যার আহ্বানে এ দেশের লাখো তরুণ জীবনবাজি রেখে রাজনীতির আগ্নেয়গিরিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে একটুকু পরিমাণও চিন্তা করেনি। ‘জীবনমৃত্যু পায়ের ভৃত্য, চিত্ত ভাবনাহীন’, এছিলো তাদের হৃৎসঙ্গীত, যা তাদের শিরা-উপশিরায় সারাক্ষণ অনুরণিত হতো। তাদের প্রতিটি লোমকূপ ছিলো এক একটি আগ্নেয়গিরি। ইতিহাসের সেই দুনিয়াকাঁপানো আগুনঝরানো সময়ে সিরাজুল আলম খান হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো এদেশের ছাত্র-শ্রমিক-তরুণ সমাজকে স্বাধীনতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবার মহান মন্ত্রে দীক্ষিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন। তাদের পথপ্রদর্শক ও প্রেরণাদাতার ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা তাঁর অনুগামী হয়েছিলো।

সিরাজুল আলম খান যাদের হাতে ধরে রাজনীতির মধ্যমঞ্চে অধিষ্ঠিত করেছিলেন শেখ হাসিনার পদতলে আত্মনিবেদিত আজকের হাসানুল হক ইনু তাদের একজন। জনাব ইনু অসুস্থ সিরাজুল আলম খানকে হাসপাতালে দেখতে যাননি। হয়তো যাবেন না। এ নিয়ে দেখছি অনেকে খুব চিন্তিত। যারা ইতিহাস জানেন, রাজনীতির নীতিহীনতা সম্পর্কে যারা অবহিত তাদের কাছে এটা আশ্চর্যজনক কিছু নয়। এদেশে এটাই বরং স্বাভাবিক। ইনু সাহেব সিরাজুল আলম খানকে দেখতে গেলে কি কিছু হয়ে যাবে? তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন? যদিও তার যাওয়া বা না যাওয়াতে কোনো কিছুই এসে যাবে না, তবু যেতে হয়। 

পিতার মৃত্যুশয্যায় পুত্রের উপস্থিতি যেমন এক ধরণের পিতৃঋণ শোধ করা, তেমনি রাজনীতিতে যিনি যাদের জন্মদাতা তাঁর রোগশয্যায় তাদের উপস্থিত থাকাটাও এক ধরণের রাজনৈতিক পিতৃঋণ পরিশোধতুল্য। ইনু ভাই হয়তো সেটা জানেন না। কেউ সে কথা তাকে বলেনি। নিজের যতটুকু মাথা তাতে হয়তো ওকথা খেলেনি। কিংবা হয়তো খেলেছে, কিন্তু সিরাজুল আলম খানকে দেখতে গেলে হাসিনা যদি অসন্তুষ্ট হন (যা হতার পক্ষে খুবই স্বাভাবিক) এবং ক্ষেপে গিয়ে যদি মান্না ও রবের মতো তাকেও আসর থেকে উঠিয়ে দেন তা হলে সপ্ত আসমানের আর কোথাও কি তার স্থান হবে? যে কার্তুজের বারুদ শেষ তা দিয়ে কেউ কি দ্বিতীয়বার গুলি করে? রব ও মান্নার মতো রাজনৈতিক এতিম ও ভবঘুরে হয়েই তা হলে বাকি জীবন কাটাতে হতে পারে। ইনু ভাই গেলো কি গেলো না, এনিয়ে উৎকণ্ঠার কিছু নেই। সিরাজুল আলম খানকে দেখতে এসে নিজের ভবিষ্যতকে জলাঞ্জলি দেবেন ইনু ভাইকে কি তেমন কেউ বলে মনে করার কোনো কারণ ছিলো, বা আছে? লেখক: মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়