প্রবীর বিকাশ সরকার: বাঙালকে আটকানো যাবে না। ভিসা কোনো ব্যাপারই না। দরকার বুদ্ধি। বুদ্ধি থাকলে আমেরিকার ভিসা লাগে না। আমেরিকা ঘরে এসে ভিসা দিয়ে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। কোনো দেশের সরকার উন্নয়ন করে না, উন্নয়ন করে বিদেশি তথা বিশ্বপুঁজিপতিরা তাদের গরজে। বাংলাদেশ এখন সেই সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। তার পেছনে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক লড়াইয়ের পটভূমি যাকে সোজা কথায় ভূ-রাজনীতি বলা হয়, সেই শক্তি কাজ করছে। আওয়ামী সরকার না থাকলেও বাংলাদেশ ওঠে দাঁড়াত এবং ভবিষ্যতে দাঁড়িয়ে যাবে, কেউ এই গতিকে রোধ করতে পারবো না। চোখ বুজে থাকলেও বাংলাদেশ উন্নত হতে বাধ্য এবং বিদেশিরাই সেটা করে দেবে।
পৃথিবীর প্রতিটি উন্নত দেশের পেছনে বিদেশি পুঁজিপতিদেরই বিনিয়োগ ছিলো। এশিয়ার প্রথম শিল্পোন্নত রাষ্ট্র জাপানও তাই, ইহুদিদের বড় বড় বিনিয়োগই উন্নতির পেছনে ছিলো শতবর্ষ ধরে, এখনো অব্যাহত। বিশে^র দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি চীনকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করেছে জাপানি পুঁজিপতিরা, এটা যারা জানার তারা ভালো করেই জানে। রাশিয়াকে গড়েছে ধনী ও পরিশ্রমী ইহুদিরা। জার্মানও তাই। আমেরিকাও গড়েছে ইতালি, জার্মানি, ইংল্যান্ডের ইহুদি ও খ্রিস্টান ধনপতিরা। ভারতের বিজ্ঞানচর্চার ভিত্তি স্থাপন করেছে ধনী ইহুদি ও খ্রিস্টান পুঁজিপতিরা এবং ভারতকে বিশে^ উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরেছে বাঙাল-বাঙালিরাই সর্বক্ষেত্রে।
‘আমেরিকান ড্রিম’ শেষ হয়েছে দুই দশক আগেই। এখন আমেরিকা ক্রমশ আবছা হতে বসেছে। তার অস্ত্রের বাণিজ্য এখন জাপান ও চীনের হাতে। যদি জাপানি সংবিধানের ৯ ধারা উঠে যায় তাহলে বিশ্বে সবচেয়ে মারণাস্ত্র তৈরি করা জাপানের পক্ষে কোনো ব্যাপারই হবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান এটম বোমা তৈরি করে ফেলেছিলো। যা স্মরণ রাখা জরুরি তা হলো, বুদ্ধি এবং সুযোগের সদ্ব্যবহার করা। উন্নয়ন কোনো ব্যাপার না আজকের যুগে। উন্নয়ন-উন্নয়ন বলে মানুষকে বোকা, ধোঁকা কোনোটাই বানানো যাবে না। বুদ্ধি এবং সুযোগ দুটোই বাঙালের হাতের মধ্যে আছে। এখন সেটা সে কীভাবে কাজে লাগাবে সেটাই দেখার বিষয়। আমেরিকা ‘ভিসা’ সংক্রান্ত যে মহাসুযোগ দিয়েছে তার যথার্থ ব্যবহার নির্ভর করছে সরকারের উপর শক্তিশালী দেশ ও জাতি গঠনের জন্য। আমেরিকা মোটেই দোষী নয়। আমেরিকা বাঙালের ইতিহাস খুব ভালো করেই জানে, তাই বলছে, বাঙাল পারে না এমন কোনো কাজ নেই। তোমরা পারবে, করে দেখাও। কিন্তু, কিন্তু সবাইকে নিয়েই করতে হবে। লেখক ও গবেষক