শিরোনাম
◈ আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে আরব আমিরাত ◈ ভারত আসবে না বাংলাদেশ সফরে, হবে না এশিয়া কাপও ◈ এপ্রিলে  ১০১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি ◈ ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস আলম ◈ জনআকাঙ্খা ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জনতা পার্টি বাংলাদেশের ◈ ভারত-পাকিস্তান তৃতীয় দিনের মতো সংঘর্ষে জড়ালো, যুদ্ধাবস্থা সীমান্তজুড়ে ◈ 'আপ বাংলাদেশ' নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ◈ দেশে অনলাইন জুয়া সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে: কঠোর হচ্ছে সরকার ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ (ভিডিও) ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ৩০ মে, ২০২৩, ০১:২২ রাত
আপডেট : ৩০ মে, ২০২৩, ০১:২২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে কারণে শিক্ষায় ন্যূনতম জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: আমার বড় কন্যা হঠাৎ ভিডিও কল করে জানালো যে, জুন মাসের শেষের দিকে কিছু নিউক্লিয়ার ফিজিক্স শিখবে, তারপর তার প্রফেসর জুলাই মাসে লস আলমস ন্যাশনাল ল্যাবে নিয়ে যাবে। ও এখনো প্রথম বর্ষ শেষ করেনি। এর মধ্যেই একজন অধ্যাপকের অধীনে কিছু হালকা-পাতলা গবেষণা অর্থাৎ চিন্তার ফ্রেমওয়ার্ক ঠিক করার কাজ শুরু হয়ে গেছে, ঠিক যেমন একজন সঙ্গীতের শিক্ষার্থী খুব কম বয়সেই একজন ওস্তাদের সঙ্গে শেখা শুরু করে। এজন্যই বলি গবেষণা হলো গুরু-শিষ্য বিদ্যা। অথচ আমাদের এখানে শিক্ষার্থীরা ৪ বছরের অনার্স শেষ করে ফেলে, কিন্তু কোনো রকম গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয় না। অন্তত তৃতীয় বছর থেকে কিংবা চতুর্থ বছরে অন্তত কিছু শিক্ষার্থীকে একজন অধ্যাপকের অধীনে গবেষণা কাজ শেখার জন্য সম্পৃক্ত করা উচিত। একজন অধ্যাপকের সঙ্গে কাজ করলে অন্তত গবেষণা কি এই ফ্রেমওয়ার্কটাও যদি ঠিক করে দেওয়া যায় এইটাও বিশাল অর্জন। ওই সময়ে গবেষণা করে আর্টিকেল প্রকাশ করতে হবে এমন না। কিছু কাজ কেবল রিপ্রোডিউস করবে। এর মাধ্যমেই অনেক কিছু শেখা হয়ে যাবে।

এই যে বিয়াংকা এই সুযোগটি পেলো আমি দেখতে পাচ্ছি ও কতটা খুশি হয়েছে ও এক্সসাইটেড ফিল করছে। এই অনুভূতিটা দেওয়াই বিশাল কাজ। এই অনুভূতি শিক্ষার্থীকে মোটিভেট করার জ্বালানি হিসাবে কাজ করবে। আমরা সবাই জানি লস আলমস আমেরিকার কতো বিশাল একটি একটি ল্যাব। একজন পদার্থবিদ হিসাবে সেখানে যেতে পারা অনেকের জন্যই একটা বিশাল স্বপ্ন। এজন্যই আমি বলি আমাদের দেশে যদি কিছু বিশ্বমানের ইনস্টিটিউট থাকতো তাহলে আমরাও আমাদের শিক্ষার্থীদের গ্রীষ্মের ছুটিতে পাঠাতে পারতাম।

এইগুলো তখনই সম্ভব যখন শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনে যারা আছে তারা শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিয়ে সব সময় ভাবে। আমাদেরতো সব সময় দূরে থাক, কখনো ভাবে না। ভাবলে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলগুলোতে বস্তির জীবন যাপন করতো না, গেস্ট রুমে টর্চার্ড হতো না। শিক্ষকরা ভাবলে শিক্ষার্থীরা ডাইনিংয়ে ভালো খাবার পেতো, লাইব্রেরিতে পড়ার পরিবেশ পেতো, শ্রেণিকক্ষে গরমে সিদ্ধ হতে হতো না। শিক্ষকরা ভাবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পাস হতো সুন্দর পার্কের মতো। যেই দেশের ক্যান্টনমেন্টের পরিবেশ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যেমন হওয়া উচিত তেমন আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অপরিকল্পিত সাধারণ লোকালয়ের মত সেই দেশে শিক্ষা ও গবেষণার প্রসার কীভাবে হবে?

এইগুলো তখনই সম্ভব যখন শিক্ষকরা রাজনীতি না করে সত্যিকারের শিক্ষক হবে। রাজনীতি আর ধান্দাবাজিতে ব্যস্ত থাকলে নিজের গবেষণার সময় কোথায় আর ছাত্রদের সময় দেওয়ার সময় কোথায় পাবে। সবার জন্য তো ২৪ ঘণ্টাতেই একদিন হয়, নাকি? সকল শিক্ষকরা যদি শিক্ষা ও গবেষণায় মনোযোগী হয় তাহলে যারা গবেষণায় ভালো করছে তারা মাস্টার্সের থিসিস সুপারভাইস করবে আর অন্যরা অনার্সের ছাত্রদের গবেষণায় হাতেখড়ি করানোর জন্য তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের ছাত্রদের নিজ নিজ গবেষণার ফিল্ডে পুরনো কাজ রিপ্রোডিউস করাতে পারে, সেমিনার সিম্পোসিয়ামে টক্ দিতে পারে, পোস্টার প্রেজেন্টেশন মেলার আয়োজন করতে পারে। এভাবে শিক্ষার্থীদের এনগেজ রাখলে শিক্ষার্থীদের ডিপ্রেশন থেকেও মুক্ত রাখা সম্ভব। এসব কিছুই সম্ভব যদি সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি ইঞ্জেক্ট করা বন্ধ করে, যদি শিক্ষকদের যথেষ্ট বেতন ও গবেষণার সুযোগ সুবিধা দেয়। আর এগুলো দিতে হলে শিক্ষায় ন্যূনতম জিডিপির ৫% বরাদ্দ দিতে হবে। লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়